ইয়াসিন আরাফাত : [২] ইরাকের বিভিন্ন জায়গায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের কবর দিতে দিচ্ছেন না স্থানীয় জনগণ ও কবরস্থান কর্তৃপক্ষ৷ তাদের ভয় লাশ থেকে এই শ্বাসযন্ত্রের রোগটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে৷ এসব লাশ হাসপাতালে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে৷এএফপি, ডয়েচে ভেলে, মিডিলিস্ট পোস্ট
[৩] এ বিষয়ে সাদ মালিক নামের এক ইরাকি নাগরিক এক সাক্ষাৎকারে তার বাবার মরদেহ সৎকারের ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, আমার বাবা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহের বেশি হয়ে গেছে মারা গেছেন। আমরা তার জন্য একটি যথাযথ সৎকারের আয়োজন করতে পারলাম না, এমনকি লাশ কবর দিতে পারলাম না৷ এটি আমাদের পরিবারের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক৷এসময় স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী তার গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়ার হুমকিও দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি৷
[৪] ইসলামে মৃত্যুর পর যত দ্রুত সম্ভব মৃতকে দাফন করার তাগিদ দেয়া হয়েছে৷ মৃত পোড়ানো এ ধর্মে নিষিদ্ধ৷ ইরাকে এ পর্যন্ত পাঁচশরও বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন৷ মারা গেছেন ৪২ জন৷ কিন্তু প্রকৃত সংখ্যা বেশি হতে পারে বলে ধারণা করেন স্থানীয়রা৷
[৫] ইরাকের অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় গোষ্ঠীর হাতে৷ বাগদাদে উত্তরপূর্বে এ সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা করোনার কারণে মারা যাওয়া চার ব্যক্তির লাশ দাফন করতে গেলে স্থানীয় নৃগোষ্ঠীর সদস্যরা তাতে বাধা দেন৷ এরপর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা এদের বাগদাদের দক্ষিণপূর্বে আরেকটি কবরস্থানে নিয়ে গেলে স্থানীয় জনগণ প্রতিবাদ করেন৷ শেষ পর্যন্ত তাদের মর্গে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হন কর্মকর্তারা৷
[৬] ইরাকের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাইফ আল-বদর বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, করোনা ভাইরাস নাক ও মুখ থেকে বের হওয়া ‘ড্রপলেট' ও কোন ‘সারফেস' বা পৃষ্ঠ থেকে ছড়াতে পারে৷ কবর থেকে ছড়ায় বলে কোন বৈজ্ঞানিক তথ্য পাওয়া যায়নি এখনো৷ তিনি জানান, সরকার লাশ দাফনের সময় সবরকমের সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, যেমন মৃতদেহকে ব্যাগে মোড়ানো, এর জীবাণুনাশ করা এবং বিশেষ কফিনে তাদের রাখা ইত্যাদি৷
[৭] দেশের সবচেয়ে বড় শিয়া ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লাহ আলি সিস্তানি বলেন, যিনি মারা গেছেন তার দেহকে তিনটি কাফনের কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে কবর দেয়া যেতে পারে৷ কিন্তু তাও মানছেন না অনেকে৷ কারবালা ও নাজাফের মত মাজার এলাকার কবরস্থানগুলোও তাতে সায় দিচ্ছে না৷
[৮] নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইরাকি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেন, মাত্র ৪০টি মৃত্যুর পরই এই অবস্থা৷ যদি অবস্থা আরো খারাপ হয়? আমরা কোথায় রাখব লাশগুলো?
আপনার মতামত লিখুন :