কায়সার হামিদ মানিক,উখিয়া প্রতিনিধি: [২] করোনাভাইরাস আঙ্ককে যেখানে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন রাস্তাঘাট পরিস্কার রাখার ও সচেতন হওয়ার জন্য মাইকিং করে নির্দেশ প্রধান করলেও তা মানছেনা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।সরজমিন বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে দেখা যায় চিত্র উল্টো।উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে ড্রেনে ময়লার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে। বাজারে ব্যবহ্নত পলিথিন থেকে শুরু করে পুরনো কাপড়ের স্তুপ, শিশুদের পরিত্যক্ত খেলনা, গৃহস্থালি বর্জ্য,বাসাবাড়ির অব্যবহ্নত আসবাবপত্র, দোকানের উচ্ছিষ্ট ময়লাসহ প্লাস্টিক ও পাটের বস্তায় ভরে ময়লা ফেলা হয়েছে ড্রেনে ও বিভিন্ন খালে।
[৩] যার ফলে পানির প্রবাহ প্রায় নেই বললেই চলে। ড্রেন ও খাল পরিস্কার করার দায়িত্ব কাদের তা সাধারণ জনগণ জানেন না।খাল ভরাট হয়ে থাকে। ড্রেনেজ ব্যবস্থাও কাহিল। রাস্তার পাশে স্কুল কলেজে যাওয়ার পথে ময়লা জমে তারপরও কেউ পরিস্কার করে না। মাঝেমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিস্কার অভিযান চলতে দেখা যায়।এখন করোনার ভয়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তায় পানি ছিটানোর দৃশ্য দেখা যায়।স্থানীয়দের দাবি ড্রেন ও খাল পরিস্কার করে মানুষকে সুন্দর পরিবেশ উপহার দেয়া। জনগণের কল্যাণে দায়িত্ব নিতে হবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে। করোনার ভয়ে মানুষ সরকারের নির্দেশে ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
[৪] প্রশাসন থেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্যে মাইকিং করা হচ্ছে। মূলত, ফুটপাত, রাস্তা বা অন্যান্য সবকিছু পরিস্কার করার পাশাপাশি ড্রেন ও খালটাও পরিস্কার রাখা দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। চারদিকে নদী বেষ্টিত উখিয়া এক সময়ের ঐতিহ্য ছিল খাল। খাল উখিয়াতে জালের মত ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। এসব খাল গিয়ে মিশেছিল নদীতে। বৃষ্টি হলে উখিয়ার পানি গিয়ে পড়ত খালে, খাল দিয়ে পানি চলে যেত নদীতে। পানির সাথে সাথে ময়লা আবর্জনা ধুয়ে-মুছে পরিস্কার হয়ে যেত। দিনের পরিক্রমায় ভরাট, দখল আর দূষণে প্রায় নিঃস্ব হয়ে গেছে এসব খাল। এমনই সময়ে উখিয়ার বালুখালিতে খাল খনন করায় এলাকাবাসির মনে আশা জেগেছে। যে খালগুলো এখনো বেঁচে আছে সেগুলোও দিন দিন অরক্ষিত হয়ে পড়েছে।
[৫] উখিয়ার রেজু খালের পাশে স্থানীয় বাসিন্দা আলা উদ্দিন বলেন, এখনো প্রতিদিন সকালে রেজু খালের মাছ বিক্রি করে অনেক পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছেন। বালুখালি পানবাজার এলাকার মোস্তাক আহমদ বলেন, বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন যে খাল খনন করা হয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে তবে অযত্ন অবহেলায় ও দখলদারদের হাত থেকে এই খালটি বাঁচাতে হবে। এই খালের ওপর দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বালুখালী খাল দৃষ্টি নন্দন হয়েছে।
[৬] খালের পাশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান। রোহিঙ্গাদের গৃহস্থালি বর্জ্য এই খালে পতিত হলে পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে অন্যান্য খালের মতো এটারও একই অবস্থা হবে। উখিয়া দারোগা বাজারের হাজিরপাড়া সড়কের পাশের ড্রেনটিতে স্খানীয় হিন্দু পরিবারের লোকজন প্রতিনিয়ত তাদের গৃহস্থলির ময়লা ফেলে রাখায় ড্রেনটি ভরাট হয়ে আছে। উখিয়ার মাছ বাজারে গিয়ে দেখা যায়,স্থানীয় মুদির দোকানদার খোরশেদ আলম ড্রেনসহ তিন হাত রাস্তা তার আয়ত্নে নিয়ে মালামাল রাখার কারণে পথচারী ও ক্রেতাদের চলাচল করতে কষ্ট হচ্ছে।
[৭] পাশাপাশি তার দেখা দেখিতে অন্যরাও একই কাজ করেছে।তরিতরকারি,মাছ ব্যবসায়ীরা,রাস্তা ও ছোট ছোট ড্রেনগুলো দখল করে ব্যবসা বানিজ্যে করে যাচ্ছে।পাশাপাশি তাদের দোকানের ময়লা আবর্জনা গুলো ফেলায় ছোট ছোট ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে আছে।রাস্তার উপরও ময়লা আবর্জনার ভাগাড় লক্ষ্য করা গেছে।বঙ্গমাতা মহিলা কলেজের রাস্তার পাশের খালি জায়গায় বিশাল ময়লার স্তুপ।
[৮] ছাত্রীরা নাকে রোমাল দিয়ে কলেজে যাতায়াত করেন। দুর্গন্ধে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষকে নাক চেপে চলাচল করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ এই ময়লা থেকে মশা-মাছি ও নানা রোগের জীবাণু ছড়িয়ে পড়ছে আশপাশের এলাকায়। উখিয়ার বিভিন্ন খাল দখলদারদের দখলে। এলাকাবাসী জানান, ড্রেন ও খাল দখলদাররা ধীরে ধীরে ভরাট করে বিল্ডিং নির্মাণ করেছে।
[৯] খালে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। কিছু দিন পরে বর্ষার মৌসুম শুরু হবে। মশা-মাছি বৃদ্ধি পাবে। সে ব্যাপারে খাল পরিস্কার নিয়ে এখনি ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি বলে মনে করছেন পরিকল্পিত উখিয়া চাই এর আহবায়ক সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ সিকদার। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :