আনিস তপন : [২] মনিরামপুর উপজেলায় তিন বয়স্ক ব্যক্তিকে মাস্ক না পরায় কান ধরে দাড় করিয়ে রাখার ঘটনায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি শৃঙ্খলা আইন অনুযায়ী চাকরিচ্যুতসহ ভবিষ্যতে পদোন্নতি বঞ্চিত হতে পারেন। তাছাড়া ডিপি চলাকালীন বন্ধ থাকবে তার বেতন-ভাতা। শনিবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
[৩] তিনি বলেন, সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার সময় শেষে অফিস খুললেই যশোর জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী ডিপার্টমেন্টাল প্রসিডিউর (ডিপি) অনুযায়ী অভিযুক্ত এসি ল্যাণ্ডকে সময় নির্দিষ্ট করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হবে। জিজ্ঞেস করা হবে কেন তিনি এমন করলেন। একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন ব্যবহার শিষ্টাচার বহির্ভূত উল্লেখ করে ফরহাদ হোসেন বলেন, এরপর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দিয়ে কমিটির মাধ্যমে শুনানী করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনসহ শুনানীতে যদি সহকারি কমিশনারের (ভূমি) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে। যা অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের জন্যও শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে।
[৪] ঘটনা পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান উল্লাহ শরিফী জানান, শনিবার সকালেই নির্যাতিত তিন ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু:খ প্রকাশ করেছি। নিজের স্বজন মনে করে তাদের কাছে টেনে নিয়েছি। এসময় খাবার হিসেবে ১০ কেজি চাল, এক কেজি ডাল, দুই কেজি আলু, এক লিটার ভোজ্য তেল, সাবান ও লবন দিয়ে এসেছি। ‘যাদের ঘর নেই, মুজিব বর্ষে তাদের সবাইকে নতুন ঘর দেয়া হবে’ প্রধানমন্ত্রীর এমন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অগ্রাধিকার দিয়ে তাদের জীর্ণ-শীর্ণ ঘরের স্থলে নতুন ঘর করে দেয়া হবে বলে তাদের জানিয়েছি। বর্তমান সরকারি নির্দেশনা সময় পার হলেই তাদের জন্য ঘর তৈরি শুরু হবে। তারাও প্রশাসনের পক্ষ থেকে দু:খ প্রকাশ করে খাদ্য সাহায্যসহ নতুন ঘরের প্রতিশ্রুতি পেয়ে খুশি হয়েছেন। সন্তুষ্ট হয়েছেন। তারা বলেছেন, কারো বিরুদ্ধে তাদের কোনো অভিযোগ নেই। এসময় সংশ্লিষ্ট থানার ওসি, পিআইও, ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা, প্রতিমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তাও আমার সঙ্গে ছিলেন। প্রশাসন সব সময়ই জনগণের সেবায় রয়েছেন। তারপরও এরকম একটি ভুল সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রশাসনের সব স্তরেই বিব্রত হয়েছেন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কিছু নগদ টাকার সহায়তা দিয়েছেন। প্রয়োজন হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নগদ টাকা দেয়া হবে।
[৫] এর আগে সাইয়েমা হাসানকে প্রত্যাহার করে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কর্যালয়ে সংযুক্ত করে আদেশ জারি করা হয়েছে এবং দুই সদস্য বিশিষ্ট একটি আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে এই প্রতিবেদককে জানান যশোর জেলা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শফিউল আরিফ। তিনি বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছকে আহবায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ৭ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবে। কাল রোববার থেকে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করবে।
[৬] বিভাগীয় কমিশনার ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, সাইয়েমা হাসানকে প্রত্যাহার করে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কর্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নির্যাতিতদের কোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে তা করা হবে। কারণ দরিদ্রদের সহায়তায় সরকারি নির্দেশনার পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনেরও দরিদ্রদের সহায়তা করার সুযোগ রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :