মাজহারুল ইসলাম : [২] বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার জয় বাংলা গ্রামের বাবুল (৪০) ৫দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায়, গতকাল দুপুরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করার ঘণ্টাখানেক পর তার মৃত্যু হয়। যুগান্তর
[৩] তার পরিবারের অভিযোগ, ঘণ্টাখানেক সময় তারা হাসপাতালের বহি এবং জরুরি বিভাগে দৌড়াদৌড়ি করে পার করলেও বাবুল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে কোনও ডাক্তারই এগিয়ে না আসায় বাবুলের মৃত্যু হয়েছে।
[৪] বোন জাহানারা বেগম বলেন, গত শুক্রবার থেকে বাবুল জ্বরে ভুগছিলো। চারদিকে করোনার কথা শুনছি। এ কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল ১২টার পর তাকে এ হাসপাতালে নিয়ে এলে বহিবির্ভাগ থেকে জানানো হয়, ১২টার পর কোনো রোগী দেখা হয় না।
[৫] বহিবির্ভাগ থেকে আমাদেরকে জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করতে বলা হয়। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফুর রহমান রোগের লক্ষণ জানতে চাইলে আমরা জ্বরের কথা বলি। জ্বর শুনেই ডাক্তার আমাদেরকে দূরে সরে বসতে বলেন।
[৬] এরপর তিনি বলেন, আপনারা হাসপাতালের আরএমওর কাছে যান। এরপর আরএমও অঞ্জন চক্রবর্তীর রুমে যাই। তিনি রোগের লক্ষণ শুনে আমাদের আবারও বহির্বিভাগে যেতে বলেন। এর মধ্যে আমার ভাই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রæত আমরা কর্মচারীদের স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে অনুরোধ জানাই। কিন্তু তখন কেউ আমাদের কাছেই আসেনি। বাধ্য হয়ে আমরা সেখান থেকে হেঁটে বহির্বিভাগের বারান্দায় যাই। এ সময় আমার ভাই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বহির্বিভাগের সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়ে আমার ভাই। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
[৭] তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা গত পাঁচ দিন একসঙ্গে রয়েছি। করোনা হলে তো আমরাও আক্রান্ত হতাম। কিন্তু আমরা সবাই সুস্থ রয়েছি। শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ডাক্তারদের এমন অবহেলার শিকার হয়ে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হলো। তার ৩ ৫ বছরের দুটি সন্তান রয়েছে। ওদের এখন কী হবে।
[৮] এ বিষয়ে জরুরি বিভাগের ডাক্তার আশরাফুর রহমান বলেন, প্রথমত আমি মেডিসিনের ডাক্তার নই। ওই রোগী ইমার্জেন্সিতে এলে আমি রোগের বিবরণ শুনে আরএমওর কাছে যেতে বলি। এরপরের খবর আমি জানি না।
[৯] খুমেকের পরিচালক টিএম মনজুর মোরশেদ বলেন, করোনা আক্রান্ত হলেও খুমেকে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা আছে। আমি যতটুকু শুনেছি আরএমও তাকে বহির্বিভাগে দেখাতে বলেছিলেন। ডায়াগনোসিস করার আগেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়। বিষয়েটির তদন্ত করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :