জিয়া উদ্দিন সিদ্দিকী, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : [২] বরগুনার আমতলী ও তালতলী আঞ্চলিক সড়কের আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর উপড় নির্মিত বেইলি ব্রিজটি মেরামতের কারনে গত ২২ দিন ধরে তালতলীর সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে দু’উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্রæত ব্রিজটি মেরামতের কাজ শেষ করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করার দাবী এলাকাবাসীর।
[৩] জানাগেছে, দু’উপজেলায় সড়কপথে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম আমতলী- তালতলী সড়ক। চল্লিশ কিলোমিটার এই সড়কটির আড়পাঙ্গাশিয়া নদীর উপর ১৯৮৫ সালে স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগ একটি ষ্টীলের বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে। এ ব্রিজটি পার হয়ে আমতলী- তালতলী উপজেলার দু’লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে। দুই উপজেলার সেতুবন্ধন এই ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন ঢাকা- তালতলী, বরিশাল- তালতলী, আমতলী- তালতলীগামী যাত্রীবাহী বাস ও তালতলীতে নির্মানাধীন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালামাল বোঝাই করা কাভার্ডভ্যান, ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাহেন্দ্রা, ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা এবং মোটর সাইকেলসহ সহস্রাধীক গাড়ি পারাপার করে। অধিক গাড়ী চলাচল করায় দীর্ঘদিন ব্রিজটি সংঙ্কার না করার কারনে ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে পড়ে। ব্রিজের পাটাতন আলগা হয়ে সরে গিয়ে মাঝখানের পাটাতন দেবে যাওয়া ও বেইলি ব্রিজটি মেরামত করার কারনে গত ২২ দিন ধরে ওই ব্রিজটি দিয়ে সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দূর্ভোগে পরেছে দু’উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ।
[৪] এনিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সচিত্র সংবাদ প্রকাশের পরে গত ১০ ফেব্রæয়ারী ওই ব্রীজের মেরামতের কাজ শুরু করেছে আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ। গত বিশ দিনেও ব্রীজটির মেরামতের কাজ শেষ করতে পারেনি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের লোকজন সপ্তাহ খানেক ব্রিজটির মেরামতের কাজ শুরু করে তা ফেলে রেখে যাওয়ার পরে আবার গত ২/৩ দিন ধরে কাজ শুরু করেছে।
[৫] আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ হুমায়ূন কবির হাওলাদার উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগের গড়িমসিতে মাঝখানে কাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দু’উপজেলার দুই লক্ষাধীক মানুষের। দ্রুত বেইলি ব্রীজটি মেরামত করে যাতায়াতের পথ সুগম করার দাবী জানান।
আড়পাঙ্গাশিয়া বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, বেইলি ব্রীজটির সংস্কার কাজ শেষ না করেই ফেলে রেখে চলে গেছেন উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ। এতে এ এলাকার মানুষের সড়কপথে আমতলী যেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগ সপ্তাহ খানেক মেরামতের কাজ করে ব্রিজের পাঠাতন খুলে রেখে চলে গেছে।
আমতলী সরকারী কলেজ শিক্ষার্থী নিপা বিশ্বাস বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের লোকজন মেরামত কাজ বন্ধ রাখার কারনে আপাদত ব্রিজটি দিয়ে চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ কারনে আমার মত এ এলাকার অনেক শিক্ষার্থীদের আমতলী গিয়ে স্কুল- কলেজে ক্লাশ করতে যেতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজটি মেরামতের কাজ শেষ করে যাতায়াতের পথ সুগম করার দাবী জানাই।
যাত্রীবাহী বাস চালক মোঃ শানু মিয়া বলেন, ব্রিজটির মেরামতের কাজ বন্ধ থাকায় গত ২২ দিন ধরে গাড়ী নিয়ে তালতলী যেতে পারছি না। এতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে জানান, ব্রিজটি মেরামতের জন্য যে ভিমগুলো প্রয়োজন সেগুলো না পাওয়ায় মেরামত কাজ কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ওই নদীতে একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মান করার জন্য দরপত্র আহবান করা হয়েছে। আশাকরি আজ কালের মধ্যে ব্রিজটির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার পরে ভারী যান চলাচল করতে পারবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন মুঠোফোনে বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে ও ব্রিজটি মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে দুই লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। ব্রিজটি মেরামতের জন্য পাঁচটি বিমের প্রয়োজন ছিল। ওই বিমগুলো না পাওয়ায় মেরামত কাজ কিছুটা বিলম্ভিত হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :