শিরোনাম
◈ খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রায় রাজনীতি কোথায়? রাজনীতিতে আলোচনায় ‘মাইনাস টু-মাইনাস ফোর’ ◈ বিমান বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের  উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ◈ নির্বাচনী মাঠ প্রস্তুত হচ্ছে, আস্থা রাখতে চায় দলগুলো ◈ বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজ, ভারতের চাপে অস্ট্রেলিয়া ◈ কপ২৯: ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে ইইউর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ ◈ মামলা করলে ৫ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার করে পাওয়া যাবে ◈ কলকাতার মেট্রোরেলে নারী যাত্রীকে বাংলা বাদ দিয়ে হিন্দিতে কথা বলা নিয়ে বাকবিতণ্ডা (ভিডিও) ◈ বাংলাদেশসহ ১২৪ দেশে পা রাখলেই গ্রেফতার হবেন নেতানিয়াহু, দেশগুলো হল.. ◈ ‘বুক কাঁপে না  মিথ্যাচার করতে?’ ট্রলের জবাবে  উপস্থাপিকা দীপ্তি ◈ এবার পশ্চিমাদের ওপর হামলার ইঙ্গিত পুতিনের

প্রকাশিত : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০২:৫৫ রাত
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ০২:৫৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম নিয়ে প্রশ্নের মুখে ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসবেন। লাখ লাখ মানুষের সামনে আগামী সোমবার উদ্বোধন করবেন স্টেডিয়ামের। আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের স্বীকৃতি পেয়ে যাবে আহমেদাবাদের সর্দার পাতিল স্টেডিয়াম। এমন আশায়ই হয়তো দিন গুনছেন ভারতের অনেক মানুষ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও কি গুনছেন না? আহমেদাবাদ যে তাঁরই এলাকা!

কিন্তু স্টেডিয়ামটা উদ্বোধনের আগেই পড়েছে বিতর্কের মুখে। ভারতে অনেক আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থাকার পরও এত খরচের মচ্ছব করে এমন একটা স্টেডিয়াম বানানোর কী দরকার ছিল, এ নিয়ে প্রশ্ন অনেকের। আবার অনেকের সংশয়, যতটা না দরকার, তার চেয়ে বেশি দেখনদারির জন্য স্টেডিয়ামটা বানাতে এত আগ্রহ ছিল মোদির। আহমেদাবাদ যে রাজ্যের সবচেয়ে বড় শহর, সেই গুজরাট যে মোদির নিজের এলাকা! এটিকে তাই বলা হচ্ছে মোদির ‘ভ্যানিটি’ প্রকল্প।

কী আছে স্টেডিয়ামটাতে? ১০ কোটি ডলার খরচ করে বানানো স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ১ লাখ ১০ হাজার। এত দিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট মাঠের মুকুট মাথায় পরে রাখা ১ লাখ ধারণক্ষমতার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডকে ছাড়িয়ে যাবে এটি। পুরো নিখুঁতভাবে বৃত্তাকার হবে স্টেডিয়ামটি।

প্রতিটি আসন ভারতের জার্সির রঙে রাঙানো। দাবি করা হচ্ছে, স্টেডিয়ামের প্রতিটি আসন বা প্রতিটি কোণ থেকেই খেলা দেখা যাবে কোনো বাধা ছাড়াই। চারটি ড্রেসিংরুম থাকবে স্টেডিয়ামটিতে, একটি অলিম্পিক গেমসের পুলগুলোর প্রমাণ সুইমিং পুলও থাকবে। ক্রিকেট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রহ আছে বলে কখনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর প্রথম ভারত সফরের সুবিধাটা নিচ্ছেন মোদি। ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পর থেকে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকেও আহমেদাবাদ নিয়ে গেছেন মোদি।

এই সর্দার পাতিল স্টেডিয়ামকে (অন্য নাম মোতেরা স্টেডিয়াম) নতুন করে আবার বানানোর ইচ্ছা অবশ্য মোদির নতুন নয়। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েই ২০০৯ সাল থেকে পাঁচ বছর গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (জিসিএ) প্রধান ছিলেন মোদি, এই স্টেডিয়ামের স্বপ্ন দেখেছেন তখন থেকেই।

জিসিএ-র বর্তমান প্রধান ভারতের মুখ্যমন্ত্রী অমিত শাহ। জিসিএ-র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম বানানো অমিত শাহ আর মোদিজির স্বপ্ন ছিল। এখন যেহেতু সেটা হয়ে গেছে, আমি নিশ্চিত বিসিসিআই (ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড) আইপিএলসহ বড় ম্যাচগুলো এই স্টেডিয়ামেই রাখবে।’

অমিত শাহ-র ছেলে জয় শাহ এখন বিসিসিআইয়ের সচিব, তাই বিসিসিআই তেমন কিছু করার সম্ভাবনা অনেক বেশিই। কিন্তু স্টেডিয়ামটার প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ১৩ কোটি মানুষের দেশ ভারতে ক্রিকেট কতটা জনপ্রিয়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর। কিন্তু সমালোচকদের চোখে, সে জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্টেডিয়াম ভারতের এখনই আছে, এত খরচ করে নতুন স্টেডিয়ামটি বানানোর দরকার ছিল না। এমনিতেই টেস্ট ম্যাচে দর্শক টানতে খাবি খাচ্ছে ভারত। সেখানে এত বড় স্টেডিয়ামে টেস্ট ম্যাচ আয়োজনে তো আরও দর্শকখরায় পড়বে!

‘বড় বড় অনেক স্থাপনার ক্ষেত্রে আগেও দেখেছি, সেগুলো তৈরি করার পর একটা সময়ে সেটা শ্বেতহস্তীতে পরিণত হয়। যতটা ব্যবহার করা উচিত, স্থাপনাগুলোকে ততটা ব্যবহার করা হয় না’—এএফপিকে বলছিলেন ভারতের প্রবীণ ক্রীড়ালেখক আয়াজ মেমন। দর্শক ধারণক্ষমতা পূরণ হওয়া নিয়েও সম্ভবত সংশয় আছে মেমনের, ‘তাঁরা নিশ্চয়ই গবেষণা করে বের করেছেন স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ কত দর্শক হতে পারে। তবে ১ লাখের বেশি দর্শক অনেক বেশিই মনে হচ্ছে।’

স্টেডিয়ামটার যথাযথ ব্যবহার না-ও হতে পারে, এমন শঙ্কা স্বীকার করে নিচ্ছেন গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও। এএফপিকে তিনি জানিয়েছেন, অন্য খেলায়ও স্টেডিয়ামটা ব্যবহারের প্রস্তাব দেওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেছেন মোদি। এই স্টেডিয়ামের পাশেই আগের মোতেরা স্টেডিয়ামের জায়গায় নতুন করে আরেকটা মাঠ রাখা হয়েছে, যেটি ক্রিকেট-ফুটবল-হকি সব খেলায় ব্যবহার করা হবে। আর খেলা না থাকলে মাঠকে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহারের রীতি তো উপমহাদেশজুড়েই আছে।

আরেকটা স্টেডিয়ামের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন আসছে মোদির দল বিজেপির প্রতিপক্ষ কংগ্রেস পার্টির দিক থেকে। কংগ্রেসের মুখপাত্র সঞ্জয় ঝাঁ-র মতে, বিভিন্ন ভেন্যুতে ম্যাচ ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর যে ‘রোটেশন পলিসি’ নিয়েছে বিসিসিআই, তাতে স্টেডিয়ামটার ‘কম ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’

‘ট্যাক্স দাতাদের টাকায় আরেকটা শ্বেতহস্তীই বানানো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে’—এএফপিকে বলেছেন সঞ্জয় ঝাঁ। -প্রথম আলো

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়