আলী রীয়াজ : প্রবাস জীবনে একটা বড় বেদনার দিক হচ্ছে দুঃসংবাদ শোনা- দূর থেকে। প্রিয়, পরিচিত মানুষের অসুস্থতা, মৃত্যুর সংবাদ এসে পৌঁছায় কখনো টেলিফোনে, কখনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। বুকে শেলের মতো বিঁধে, কিন্তু কিছুই করার থাকে না এমনকি যে তার স্বজনদের পাশ দাঁড়িয়ে দুই মুহূর্তে শোকের ভাগিদার হবো, তাও হয় না। কিছু কিছু মৃত্যু সংবাদ এমন হয় যে, বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় না। মোটেই সত্য মনে হয় না। কোনো মৃত্যুর সংবাদের জন্যই আমরা প্রস্তত থাকি না, কখনোই না। এর অনিবার্যতা স্বত্বেও। কিন্তু এই বেদনা শেলের মতো বিঁধে যখন অপরিণত বয়সের কারও মৃত্যুর খবর পাই। দীপু হাসানের মৃত্যুর সংবাদ সে কারণেই বিশ্বাস করতে পারিনি। জিল্লুরের পোস্ট দেখে ফোন করে নিশ্চিত হতে হয়েছে। গত গ্রীষ্মকালে ঢাকায় দীপুর সঙ্গে বসে দুপুরের খাবার খেয়েছি।
২০১৮ সাল থেকে আমার একটি গবেষণা প্রকল্পের কাজে যুক্ত ছিলো দীপু । গত জুন- জুলাই মাসে কত কথা হলো, কতো রসিকতা। সজ্জন মানুষ বললে দীপুর সবটা বলা হয় না। কীভাবে বললে যে দীপুকে বোঝানো যায় জানি না। ওকে আমি চিনি কয়েক দশক ধরে। এতোটা সময়ে কখনোই আমি তাকে উদ্বিগ্ন দেখিনি, কখনোই অন্যকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে দ্বিধা করতে দেখিনি। দীপুকে দেখলে আমার মনে হত যে মানুষের ভেতরে যে একধরনের স্থিরতা থাকে সেটাই দীপু। দীপু কাউকে চেনে কিন্তু সে দীপুকে পছন্দ করে না এমনটি সম্ভব বলে আমার মনে হয়নি। কিন্তু এখন দীপুকে নিয়ে আমাকে লিখতে হচ্ছে, দীপুর কথা আর কীভাবে বলতে পারতাম? এখনো মনে হচ্ছে আবার যখন ঢাকায় যাবো দীপুর সঙ্গে দেখা হবে; কিন্তু দেখা হবে না। এই সময়ে আমি যদি দীপুর প্রিয়জনের পাশে দুই দ- দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম। তাঁদের অপূরণীয় ক্ষতি ও বেদনার ভার আমি বইতে পারব না। কিন্তু তারপরেও যদি একবার বলতে পারতাম এই শোকের কিছুটা হলেও আমারও। ফেসবুক থেকে