সিরাজুল ইসলাম: বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ১৫ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম। তিনি বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বািচিত হন।
২০১৫ সালে আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে নির্বাচনে গিয়ে মাঝপথ থেকে সরে দাঁড়িয়ে রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মনজুর। বর্তমান মেয়র নির্ভার থাকার কথা থাকলেও রাজনীতির হিসাব-নিকাশে উল্টো টেনশন বাড়িয়েছে আ জ ম নাছির শিবিরে।
গতকাল মনজুরের পক্ষে তার শ্যালক আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম নেন। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকলেও দলীয় প্রতীক না পেলে নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন মনজুর আলম।
এদিকে এখনও নাছিরকে দলের পক্ষ থেকে গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়নি বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। শেষ মুহূর্তে হয়তো নাছিরকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম শোনা গেলেও তারা আগ্রহী নন। ফলে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাছিরের বিকল্প নেই। কিন্তু মনজুর আলম মনোনয়নপত্র নেয়ার পর সেই ভাবনায় ছন্দপতন ঘটেছে। বিএনপির সমর্থন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হলেও এর আগে তিন দফায় প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর ছিলেন মনজুর। ব্যবসায়ী হিসেবে সদালাপী ও বিনয়ী হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে। এসব কারণে মেয়র নির্বাচনের মেরুকরণ নিয়ে বেশ উৎকণ্ঠায় চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
২০১৫ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নাছিরের কাছেই হেরেছিলেন তখনকার বিএনপি নেতা মনজুর। মাঝপথে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে বিএনপির রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ান। এর আগে ২০১০ সালের নির্বাচনে ৪ লাখ ৭৯ হাজার ১৪৫ ভোট পেয়ে নিজের রাজনৈতিক গুরু এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রায় ৯৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন বিএনপিসমর্থিত প্রার্থী মনজুর। এর পর তাকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা করা হয়।
তার আগে মনজুর আলম তিন দফায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর (কমিশনার) ছিলেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র থাকাকালে বিভিন্ন সময় ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্বও পালন করেন। মনজুরের বাবা আবদুল হাকিম কন্ট্রাক্টর ছিলেন পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি নগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটিরও সদস্য ছিলেন।
২০১৫ সালে সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন মনজুর। যদিও পরে আবার পুরনো দলে ফিরে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন, কিন্তু মনোনয়ন পাননি।
‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের’ প্রতিষ্ঠাতা মনজুর নিজ এলাকা কাট্টলীসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কার্যক্রমে যুক্ত আছেন।
আপনার মতামত লিখুন :