বাংলাদেশ প্রতিদিন : প্রায় দু বছর আগে ভারতের শীর্ষ আদালত দেশের বিচার ব্যবস্থায় আরও স্বচ্ছতা আনতে, বিচার প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচার অর্থাৎ লাইভ বা ইন্টারনেটের মাধ্যেমে লাইভ স্ট্রিমিং করার পক্ষে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
যদিও তারপরও ভারতের বিচার প্রক্রিয়ার ইতিহাসে এখন পর্য্ন্ত তেমন কোনও উদাহরণ নেই, তবে এবার সম্ভবত তা হতে চলেছে। বেশ কিছু বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টে দাখিল হওয়া এক আবেদনের জেরে, এবার ভারত এমনকি সারা বিশ্বের মানুষ, এক পার্সি মহিলার সন্তানদের ধর্মীয়স্থানে প্রবেশ করতে না দেওয়ার কারণে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি, সরাসরি You Tube এর মাধ্যমে সম্ভবত দেখাতে চলেছেন।
বেশ কিছু বছর আগে আবেদনকারী পার্সি নারী অন্য ধর্মের পুরুষকে বিয়ে করায় তাদের ছেলে ও মেয়ের ওপর পারসিক ধর্মীয়স্থানে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এর পরই তার সন্তানদের ধর্মস্থানে প্রবেশ করতে দেওয়ার দাবি জানিয়ে, তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদন জানিয়েছিলেন দায়ের হওয়া মামলায় শুনানি ইউ টিউবে লাইভ সম্প্রচার করতে। যদিও হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর তিনি ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেন। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেন, সারা পৃথিবী যাতে এই শুনানি সরাসরি দেখতে পায়, তাই তা লাইভ সম্প্রচার করা যেতে পারে You Tube-এর মাধ্যমে।
যদিও আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুনানির মূল পর্বের লাইভ করা যাবে এবং সরাসরি সম্প্রচারের সম্পূর্ণ খরচ দিতে হবে আবেদনকারীকেই।
এর আগে ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর, তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ, সরাসরি সম্প্রচারের আবেদন জানিয়ে দায়ের হওয়া একগুচ্ছ আবেদনের ভিত্তিতে এই রায় দিয়েছিলেন।
বিচারব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনতে ভারতের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, সূর্যালোকই জীবানু বিনাশ করতে পারে। আর বিচারপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে শুনানির লাইভ স্ট্রিমিং বা সরাসরি সম্প্রচারও তেমনি গুরুত্বপূর্ণ।
দেশটির সুপ্রিম কোর্টের মতে, এতে যেমন আইনের ছাত্রছাত্রীরা আদালতে সওয়াল–জবাব কীভাবে হয় জানতে পারবে, তেমনি কোনও মামলার শুনানি কীভাবে হচ্ছে? কী কী সওয়াল–জবাব হচ্ছে? তাও জানতে পারবেন সাধারণ মানুষ।
যার পর কোন কোও বিষয়ে লাইভ স্ট্রিমিং বা সরাসরি সম্প্রচার করা হবে এবং কোন কোন বিষয়ে সেটি করা হবে না সেই বিষয়ে একটি নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেই নির্দেশিকার সূত্র ধরেই এবার ভারতের বিচার ব্যবস্থার ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম নিজের নাম তুলতে চলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্র: এই সময়
আপনার মতামত লিখুন :