মাজহারুল ইসলাম : বাম্পার ফলন আর ভালো দাম পাওয়ায় গাইবান্ধার চরাঞ্চলের কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। চাষিরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ক্রয় প্রতিনিধিরা ক্ষেত থেকেই মরিচ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যায়যায়দিন
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, চরাঞ্চলের মরিচ গুণে-মানে আকর্ষণীয়। ফ্লেভার অনেক ভালো। স্বাদে অতুলনীয়। উৎকট গন্ধ নেই। তা ছাড়া এই মরিচ শতভাগ স্থানীয় জাতের।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছর এ জেলায় ১২ হাজার ১১২ বিঘা জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্য ছিলো। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১২ হাজার ৭৮৭ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ হয়েছে। ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ফুলছড়ি উপজেলায় চরাঞ্চল বেশি। তাই এ উপজেলায় অন্য ৬ উপজেলার চেয়ে বেশি মরিচ চাষ হয়েছে। এই জেলার নদী-তীরবর্তী চরাঞ্চলে এখন মাঠের পর মাঠ কাঁচা-পাকা মরিচ। আর তাই জমি পরিচর্যা এবং মরিচ তোলার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা।
বাঘবাড়িচর গ্রামের মরিচ চাষী আশরাফ বলেন, এটি একটি লাভজনক ফসল। অল্প খরচে বেশি লাভ পাওয়া যায়। এবার ৮ বিঘা জমিতে দেশি জাতের মরিচ চাষ করেছেন তিনি। মরিচ চাষে প্রতি বিঘায় ১৫-১৬ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘায় উৎপাদন হয় ৬০ থেকে ৬৫ মণ। বর্তমানে প্রতিমণ কাঁচা মরিচ ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। ফলন পাওয়া যায় দুই মাস পর থেকে।
অন্যান্য ফসলের তুলনায় মরিচ চাষে বেশি লাভ হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা । খাটিয়ামারি গ্রামের গোলাপ হোসেন (৫৩) বলেন, তিনি প্রায় ৬ বিঘা জমিতে মরিচ চাষ করেছেন। তার মরিচে পাক ধরেছে। সপ্তাহে একবার মরিচ তোলেন তিনি। এরপর ফুলছড়ি হাটে নিয়ে তা বিক্রি করেন। সেখান থেকে প্রাণ কোম্পানির পাইকাররা মরিচ কিনে নিয়ে যায়। আবার ক্ষেত থেকেও বেচা হয়।
ওই গ্রামের গোলেনুর বেগম (৪৫) বলেন, চরের মরিচ বিক্রি নিয়ে কোনও চিন্তা করতে হয়না। সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের হাসানপাড়া গ্রামের আমশের আলী (৩৫) বলেন, চরের বাইরে উঁচু জমিতেও মরিচের ফলন ভালো হয়। তবে কাঁচা মরিচের তুলনায় পাকা মরিচের চাহিদা ও দাম বেশি বলে তিনি জানান।
সাদুল্লাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান বলেন, জমিতে হালকা চাষ দিয়ে মরিচের বীজ রোপণ করতে হয়। পরে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নিড়ানি, সামান্য সেচ ও সার দিতে হয়। মূলত পরিচর্যাই আসল কাজ।
আপনার মতামত লিখুন :