ডেস্ক নিউজ : বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় থ্রিডি এবং মোশন অ্যানিমেশন। থ্রিডি অ্যানিমেশন সাধারণত বিভিন্ন সফটওয়্যারে নানা ধাপ অনুসরণ করে তৈরি করা হয়। আমরা কুংফু পান্ডা, টয় স্টোরিসহ যত জনপ্রিয় অ্যানিমেশন সিনেমা দেখি, সেগুলো প্রায় সবই থ্রিডি অ্যানিমেশনে তৈরি।
জনপ্রিয় মোশন ক্যাপচার অ্যানিমেশন
অ্যানিমেশন জগতে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো মোশন ক্যাপচার। এর মাধ্যমে যে কোনো ধরনের অঙ্গভঙ্গি বা কার্যক্রমকে রেকর্ড করে তাকে ডিজিটাল মডেলের অ্যানিমেশনে রূপ দেওয়া হয়। বিনোদন, গেম, রোবটিক্সসহ বিভিন্ন মাধ্যমে এই মোশন ক্যাপচারে অ্যানিমেশন ব্যবহার হয়। বর্তমান সময়ে চলচ্চিত্রে বেশি ব্যবহার হয় এই অ্যানিমেশনটি। ক্যারেক্টারের মোশন তথ্য নিয়ে ডিজিটাল অ্যানিমেশন থ্রিডি করা হয় কম্পিউটারের সহায়তায়। এভাবেই একেকটি চরিত্রের প্রয়োজনে মুখভঙ্গি, আঙুলসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের গতি নিয়েই তৈরি থ্রিডি মোশন ক্যাপচার অ্যানিমেশন। লাইভ ক্যারেক্টারের বিভিন্ন মোশন ক্যাপচার বিভিন্ন সময়ের কি-ফ্রেমে লাইভ মোশন রেকর্ড করে একেকটি থ্রিডি অ্যানিমেশনে রূপ দেওয়া হয়। মূলত এটি এমন একটি প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে জীবন্ত বা লাইভ অভিব্যক্তিকে ডিজিটাল প্রযুক্তিগত অভিব্যক্তিতে রূপদান করা হয়।
দেশে-বিদেশে অ্যানিমেশনের চাহিদা
অ্যানিমেশনের চাহিদা সব সময়ই ছিল। এখন আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। বিদেশে কম্পিউটার অ্যানিমেশনের কেমন চাহিদা তা অ্যানিমেশন সিনেমাগুলোর আয় এবং খরচ দেখলেই ধারণা পাওয়া যায়। অনলাইন মার্কেট প্লেসগুলোতেও এর চাহিদা ব্যাপক। আমাদের দেশে অ্যানিমেশনের ব্যবহার খুব কম হলেও, চাহিদা বাড়ছে। বর্তমানে বিজ্ঞাপনে কিছু অ্যানিমেশনের কাজ হয়ে থাকে। তবে দেশে বসেই অনেকে অ্যানিমেশন সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক অঙ্গনের কাজ করছেন। সরকারও গেম, অ্যানিমেশনের দিকে বিশেষ নজর দিয়েছে। বড় বাজেটের কাজ পাওয়া খুবই সোজা যদি দক্ষতা থাকে। আর্কিটেকচারাল ভিজুয়ালাইজেশনের অনেক কাজ এখন আমাদের দেশে হয়। অ্যানিমেশনে দক্ষ হলে কাউকে বেকার বসে থাকতে হবে না। আশার কথা হচ্ছে, বর্তমানে বেশকিছু আন্তর্জাতিক মানের কাজও হচ্ছে।
অ্যানিমেশনে আমাদের ভবিষ্যৎ
দেশে অনেক ভালো মানের অ্যানিমেটর রয়েছেন। অ্যানিমেশন এ দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় গেমের ক্ষেত্রে। দেশেই এখন তৈরি হচ্ছে বিশ্বমানের গেম। স্পিনঅফ স্টুডিওর ফাউন্ডার এবং সিইও আসাদুজ্জামান জানান, দেশের জন্য অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ করার তেমন কোনো সুযোগ নেই। আমাদের দেশের বেশিরভাগ স্টুডিওগুলো বাইরের জন্য কাজ করে থাকে। সেদিক থেকেও বেশি কাজ হয় ভার্চুয়াল ডিজাইন অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন নিয়ে। এ দেশে ভালো অ্যানিমেটর এবং ডেভেলপার থাকা সত্ত্বেও কাজ কম হচ্ছে। তার অন্যতম কারণ মার্কেটিং। গেমিংয়ের জন্যও মার্কেটিং এবং প্রডিউসারের প্রয়োজন, যা এই দেশে নেই বললেই চলে। বাইরের দেশে মোশন অ্যানিমেশন নিয়ে অনেক কাজ হয়। তাই সেখানে বড় একটি মার্কেট তৈরি হয়। কারণ এর সঙ্গে যুক্ত থাকেন একজন চিত্রশিল্পী, থ্রিডি ডিজাইনার, মোশন অ্যানিমেটর, ডেভেলপারসহ অনেকে।
এই কালচারটি এ দেশে এখনও গড়ে ওঠেনি। ড্রিমার্জ ল্যাবের ফাউন্ডার এবং সিইও তানভির হোসাইন খান জানান, আমাদের দেশে খুব স্বল্প পরিসরে অ্যানিমেশন নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এর ব্যবহার অনেকটাই কম। বর্তমানে আমরা এআর এবং ভিয়ার নিয়ে বড় পরিসরে কাজ করছি। এ ক্ষেত্রে টুডি এবং থ্রিডির ব্যবহার বেশি। তাবে করপোরেট অনেক কাজে এখন অ্যানিমেশন ব্যবহার হচ্ছে। এই কাজ যত বাড়বে, অ্যানিমেশনের চাহিদাও বৃদ্ধি পাবে। আমাদের দেশে গেমিংয়ের ক্ষেত্রে অ্যানিমেশনের ব্যবহার বাড়ছে। সম্পাদনা: জেরিন
আপনার মতামত লিখুন :