বিপ্লব রায়, শাল্লা প্রতিনিধি : শুষ্ক মওসুম ধীরে ধীরে শেষ হচ্ছে। কিন্তু সুনামগঞ্জের শাল্লায় কয়েকটি বাঁধে এখনো শুরু হচ্ছে না পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ‘ফসল রক্ষা বাঁধ’ নির্মাণ কাজ।
প্রতি বছরই পিআইসি গঠনে স্বজনপ্রীতি থাকায় হাওরের বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকার বাঁধ নির্মাণের কাজের নামে লুটপাটের মহোৎসব চলে। আর এতে সম্পৃক্ত থাকেন পিআইসির লোকেরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একই পরিবারে একাধিক পিআইসি, আবেদিত প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে হাওরে জমি নেই এমন ব্যক্তিদের নিয়ে পিআইসি গঠন করা হয়েছে। ফলে হাওর রক্ষা বাঁধের কাজের বিষয়ে এমন ধীরগতি।
জানা গেছে, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনের মাধ্যমে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু হওয়ার কথা। আর ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু শাল্লার ছায়ার হাওরের পিআইসি নং ১৩২ ও ১২৮ উপ-প্রকল্পে এখনো বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় শঙ্কায় রয়েছেন হাওরপারের কৃষকেরা। তবে ১৩২ নং পিআইসিকে স্থানীয়রা অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প হিসেবে দাবি করছেন। তারা জানান, বর্ষায়ও বেড়িবাঁধ থেকে কল্যাণপুর রাস্তা দিয়ে এলাকার লোকজন চলাফেরা করতে পারেন।
এ প্রকল্পের সভাপতি সোহেল মিয়া বলেন, এ বাঁধটি বর্ষায় তলিয়ে না গেলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি আমাকে এ প্রকল্প দিয়েছেন। আমি প্রকল্পের কাজ কয়েকদিনের মধ্যে শুরু করবো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাওরাঞ্চলে ইতোমধ্যে বোরো ধানের চাষাবাদ শেষ হয়ে গেছে। উপজেলার সবক’টি হাওরে পানি সময়মতো কমেছে। কিন্তু এখনো বাঁধের কাজ শুরু না হওয়ায় কৃষকরা চিন্তায় রয়েছেন। বোরো ফসল অকালবন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে শিগগির কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এদিকে, শাল্লা উপজেলা পাউবো অফিস জানিয়েছেন, এবার শাল্লা উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের জন্য ২৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কৃষক আব্দুস ছাত্তার জানান, ২/৩ বছর পর পর হাওরে ফসল ডুবির ঘটনা ঘটে। দু’বছর ধরে হাওর তলিয়ে না গেলেও এবছর বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই সময়মতো বাঁধের কাজ শেষ না হলে সরকারে প্রচেষ্টা ও বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকা ভেস্তে যাবে।
এদিকে, বুধবার বেলা ১২টায় পিআইসি কমিটির সদস্যদের নিয়ে শাল্লা উপজেলা হলরুমে মতবিনিময় করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মোক্তাদির হোসেন। মতবিনিময় সভায় কাজ শুরু না হওয়া সকল প্রকল্পের সভাপতিকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যথায় তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে হুশিয়ারী প্রদান করেন।
শাল্লা উপজেলা উপ সহকারি প্রককৌশলী সমসের আলী মন্টু বলেন, ক’দিন হয় তাদেরকে ওয়ার্ক ওর্ডার দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে কাজ শুরু করার কথা। এখনো যদি কোনো পিআইসি কাজ শুরু না করেন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সুনামগঞ্জ (২) পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, এখনো যদি কোনো পিআইসির কাজ শুরু না হয় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা : আলআমিন
আপনার মতামত লিখুন :