রাশিদ রিয়াজ : পাকিস্তানের পারমানবিক বোমার জনক বলা হয় তাকে। কিন্তু গত ১৫ বছর ধরে তাকে কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনীতে থাকতে হচ্ছে। প্রিয়জন, বন্ধু-বান্ধব কিংবা স্বজনের সঙ্গে চাইলেই তিনি দেখা করতে পারেন না। তারাও কাদির খানের কাছে হুট করে চলে আসতে পারেন না। একাকী অনেকটা বন্দী এই জীবনে হাঁপিয়ে উঠেছেন পাকিস্তানের এই পরমাণু বিজ্ঞানী। ২০০৪ সালে ইরান, লিবিয়া ও উত্তর কোরিয়ার কাছে পারমানবিক বোমা বানানোর কৌশল জানিয়েছেন একথা তিনি স্বীকার করার পর তাকে এমন গৃহবন্দী অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। জেনারেল পারভেজ মোশাররফের শাসনামলেই তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। আরটি
বিজ্ঞানী আব্দুল কাদের খানের বয়স এখন ৮৩ বছর। সুপ্রিম কোর্টে আবেদনে তিনি বলেছেন এধরনের অবরুদ্ধ জীবন মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। তাকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা শিথির করা হোক। গৃহবন্দীর আদেশ সরকারিভাবে ২০০৯ সালে তুলে নেয়া হলেও আব্দুল কাদের খান এখনো নিরাপত্তা কর্মীর বেষ্টনী ছাড়া কোথাও চলাচলের সুযোগ পান না। গত সোমবার আদালতে দেয়া আবেদনে তাই তিনি প্রশ্ন তুলে বলেছেন, কোনো সরকার বা কর্তৃপক্ষ কখনো কি কারো সাংবিধানিক সুরক্ষা ভঙ্গ করে তাকে তার স্বজন, ভৃত্য, পরিবারের সদস্য, বন্ধু, সাংবাদিক, সহকর্মী, কর্মকর্তা, আমলা বা অন্য কারো সঙ্গে সাক্ষাতে বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারে? তিনি এও জানান, নিরাপত্তা কর্মীদের আমাকে আমার বাড়িতে নির্জন কারাবাসের বন্দোবস্ত করা ছাড়া আর কোনো কাজ নেই।
১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের পারমানবিক বোমা বিস্ফোরণ পরীক্ষার পেছনে এই বিজ্ঞানী ছিলেন অন্যতম পথিকৃথ। ২০০১ সালে এই বিজ্ঞানী অবসর নেন। কিন্তু পারমানবিক বোমা তৈরির কৌশল হস্তান্তর করার মধ্যে দিয়ে এই বিজ্ঞানী মহানায়ক থেকে পরিণত হন খলনায়কে। সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদনে আব্দুল কাদের খান আর্জি জানান, শত্রুর মোকাবেলায় পাকিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবদান রাখতে পেরে তিনি গর্বিত। এখন তিনি বার্ধক্য উপনীত হওয়ায় শারীরিক কারণেই তার ওপর থেকে এমন কঠোর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেয়া জরুরি।
আপনার মতামত লিখুন :