এএফএম মমতাজুর রহমান, আদমদীঘি প্রতিনিধি : আজ ১৪ ডিসেম্বর অবাঙালি (বিহারী) অধ্যুষিত সান্তাহার রেল জংশন হানাদার মুক্তদিবস। দিবসটিকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে অবরদ্ধ সান্তাহারকে মুক্ত করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সান্তাহার জংশন শহরের ইতিহাস গৌরবময়।
দেশের বৃহৎ অবাঙালি (বিহারী) অধ্যুষিত শহর হওয়ায় এখানে পাকহানাদার বাহিনীরা মূলঘাটি স্থাপন করে। এ শহর থেকে পাক সেনারা নিয়ন্ত্রণ করতো গোটা উত্তরাঞ্চল। এখানকার পাকহানাদারদের নিমর্ম অত্যাচারের পাশাপাশি অবাঙালি (বিহারীদের) অত্যাচার ছিল অবর্ণনীয়। শহরে দীর্ঘ ৯ মাস কোনো বাঙালিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। বাঙালি দেখামাত্রই চালানো হত নিমর্ম নির্যাতন। করা হত হত্যা। প্রত্যেক বিহারী ছিলো অস্ত্রে সজ্জিত। তারা পার্শ্বের গ্রাম গুলোতে লুটপাটসহ অগ্নিসংযোগ করতো। বাঙালিরা ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযোদ্ধে।
একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধের গৌরাবান্বিত দিনগুলো উজ্জল নক্ষত্রের মতো আজোও জ্বল জ্বল করে। স্বাধীনতা যুদ্ধে উত্তাল দিনগুলোতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মত সান্তাহার শহরও জ্বলে উঠেছিল।
স্বাধীনতা সংগ্রামে সান্তাহারের ইতিহাস তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য প্রথম থেকেই শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ। ১০ ডিসেম্বর থেকে কমান্ডার এল,কে আবুল হোসনের নেতৃত্বে ফজলুল হক, নজরুল ইসলাম, আজিজার রহমান নান্টু, আব্দুল হাকিম, মনসুর রহমানসহ অন্যান্য কমান্ডারের নেতৃত্বে প্রায় ৪ শতাধিক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সান্তাহারের দক্ষিণ, উত্তর ও পূর্ব দিকে অবস্থান নিয়ে খণ্ড খণ্ডভাবে সান্তাহার শহরে অবস্থিত পাকহানাদারদের উপর হামলা চালিয়ে ৩ দিক থেকে ঘিরে ফেলে।
মুক্তিযোদ্ধারা ৩ দিকে লাইন উপড়ে দিয়ে শুক্রদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। ১২ ডিসেম্বর কায়েতপাড়ার নিকট রেল উপড়াতে গিয়ে শহীদ হন সজিত নামের এক মুক্তিযোদ্ধা। এর পর আসে সেই মাহেদ্রক্ষণ ১৪ ডিসেম্বর। ৩ দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমণের মুখে এই দিন পাকহানাদাররা সান্তাহার ছেড়ে নওগাঁ হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধারা র্দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পর এই দিনে সান্তাহারে বিজয়ের পতাকা উড়ায়। সম্পাদনা : জেরিন মাশফিক
আপনার মতামত লিখুন :