পীর হাবিবুর রহমান : বার্মার স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা সমরনায়ক জেনারেল অংসান। যাকে আধুনিক বার্মার জাতির জনক বলা হয়। তার কন্যা সুচি গণতন্ত্রের সংগ্রামে একদিন বিশ্বে আলোচিত রাজনীতিবিদ হয়েছিলেন। তার সংগ্রাম ত্যাগ ১৫ বছরের গৃহবন্দি জীবন, স্বামীর মৃত্যুর সময় দেখা না হওয়া, সব মিলিয়ে ছিলাম তার মুগ্ধ ভক্ত। তার দলকে গণরায়ে জনতা বিজয়ী করলেও বার্মার সামরিক জান্তা ক্ষমতা দেয়নি। পরে ভূমিধস বিজয়েও তারা সংবিধানে আনা সংশোধনীর দোহাই দিয়ে তাকে রাষ্ট্রপতি নয়, রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা করে। সরকার প্রধানের মর্যাদায় আসেন। স্বামী-সন্তান ব্রিটিশ তাই এ সাংবিধানিক দেয়াল। মানবতা ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে অবদানে সুচি শান্তিতে নোবেলসহ অনেক পুরস্কারের মাল্য পরেন গলায়। দিল্লি ও অক্সফোর্ডের স্নাতক সুচি এখন আর সেই বিশ্ববাসীর বিশেষ করে গণতান্ত্রিক চেতনাধারা ও মানবিক হৃদয়সম্পন্ন মানুষের মনে শ্রদ্ধার আসনে নেই। বার্মার সামরিক জান্তার গণহত্যার পক্ষে অবস্থান নেয়ায় বিতর্কিত কলংকিত ঘৃণিত নামে পরিচিত।
ইতিহাসের গৌরবের উজ্জ্বল মুকুট খসে পড়ে এক সামরিক জান্তার করুণাশ্রিত দাসের চেহারায় আবির্ভূত হয়েছেন। পশ্চিমা মানবতাবাদীরা যা পারেননি, গাম্বিয়া তাকে আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় তুলে গণহত্যার অভিযোগ তুলে মানবতাবাদী পৃথিবীর মানুষের কাছে প্রশংসিত। জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদ ৪৮ এখানে প্রযোজ্য নয়, অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে সুচি বার্মার গণহত্যার রক্তাক্ত সামরিক জান্তার পক্ষে ডিফেন্ড করে নিজের হাতকেও রক্তে ভিজিয়েছেন। সেদিনের মানবতা ও গণতন্ত্রের নেত্রী সুচি এখ বার্মার সামরিক জান্তার মুখপাত্রে পরিণত ক্ষমতার লোভে। তার বর্ণাঢ্য অতীতের ত্যাগের দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসকে রাখাইনদের রক্তে ভাসিয়ে দিয়েছেন। শান্তির নোবেলের মর্যাদাকে করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ। সুচি এখন ইতিহাসের নন্দিত নক্ষত্রের পতন ঘটিয়ে এক নিন্দিত নাম। ফেসবুক থেকে