হাসনাত কুশল : রোববার ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (আইসিআইজে) জানায়, চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমরা দীর্ঘদিন ধরে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে জীবনযাপন করছে। ১৭টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ফাঁস হয়ে যাওয়া তথ্য অনুযায়ী তারা আরও জানায়, ওই প্রদেশে আনুমানিক দশ লাখ উইঘুর বসবাস করে এবং তাদের বেশিরভাগই মুসলিম ধর্মাবলম্বী। এএফপি, বিবিসি
নথিতে উইঘুর মুসলিমদের সার্বক্ষণিক নজরদারির আওতায় রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। এমনকি তারা যখন রেচনকক্ষে থাকবে তখনও এ নজরদারি অব্যাহত রাখার কথা এতে বলা হয়। চীনের নৃত্বত্ত্ব বিশ্লেষক ও মেলবোর্নের লা ট্রোব ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেমস লেবোল্ড এ বিষয়ে মন্তব্য করেন, দেশটিতে ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি তাদের জোরপূর্বক ‘ব্রেইনওয়াশ’ করে থাকে। এ নথি দেশটির ক্ষমতাসীন দলের পূর্বনির্ধারিত, পীড়নমূলক এবং বিচার বহির্ভূত নির্দেশনা। এ নথিটি ফাঁস হওয়ার এক সপ্তাহ পর মার্কিন সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ৪০০ পৃষ্ঠার এ নথিতে উইঘুর মুসলিমদের স্বাতন্ত্র্য ও ঐতিহ্য মুছে ফেলার কথা উল্লেখ ছিলো। ২০১৪ সালে দেশটির এক রেলস্টেশনে উইঘুর মুসলিমদের ওপর হামলার পর থেকেই এ নির্যাতন শুরু হয়। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর ‘উগ্রপন্থী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী ষড়যন্ত্রকারীদের প্রতি’ আনুকূল্য না দেখানোর নির্দেশের ফলে আজকের উইঘুর মুসলিম নির্যাতন চরমে উঠেছে। তাদেরকে জোরপূর্বক মান্দারিন ভাষা শেখানো হচ্ছে।
নথিতে আরও বলা হয়, ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে মোবাইল ও ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নথিতে এসব ক্যাম্পগুলোকে ‘সবচেয়ে স্পর্শকাতর’ জায়গা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সেখানকার এক কর্মচারী জানান, কেন্দ্রগুলোতে ‘ব্রেইনওয়াশের’ সময় সকল প্রকার নির্যাতন করা হয়ে থাকে উইঘুরদের প্রতি।
২০১৭ সালের জুনে ফাঁস হওয়া বুলেটিন থেকে জানা যায়, দেশটিতে ১৫ হাজার উইঘুর মুসলিমকে ‘ব্রেইনওয়াশের’ জন্য ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে পাঠানো হয়। এর মধ্যে দুই হাজার উইঘুরকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়। আরেক বুলেটিনে জানা যায়, ২০১৭ সালের জুনে দেশটির সরকার ১৫৩৫ জনকে ভিসাপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে।
তবে ফাঁস হওয়া এ নথির বিষয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অস্বীকার করেছে। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে তিনি বলেন, এগুলো ষড়যন্ত্রকারীদের তৈরি করা ‘ভূয়া নথি।’ তিনি আরও বলেন, কথিত ‘নির্যাতন ক্যাম্পের’ বিষয়ে যা রটনা করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। এ ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য হলো সন্ত্রাস প্রতিরোধ করা। সম্পাদনা : খালিদ আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :