আসিফুজ্জামান পৃথিল : ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাঁক্রো বললেন, ইউরোপ এক খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। ভূ-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে গেলে এখন নিজেদের কৌশল নিজেদেরই ঠিক করতে হবে। এমন বক্তব্যের পর সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। এমনও প্রশ্ন উঠছে অন্যতম অংশীদার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের এমন নেতিবাচক মন্তব্যের পর ন্যাটো ভেঙে যাবে কিনা। ম্যাঁক্রোর মন্তব্যের তুমুল সমালোচনা করেছে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে রাশিয়া সদস্য না হলেও এই বক্তব্যের প্রশংসা করেছে। ইকোনমিস্ট, বিবিসি, এএফপি
আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য ন্যাটো সম্মেলনকে সামনে রেখে ইকোনমিস্ট ম্যাগজিনকে দেয়া এক সাাক্ষাৎকারে ইমানুয়েল ম্যাঁক্রো বলেছেন, ন্যাটোকে টিকিয়ে রাখতে সদস্যরাষ্ট্রগুলো আর বেশিদিন যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভর করতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা মস্তিস্ক মরে যাওয়া ন্যাটোর কাছে আর কী-ই বা প্রত্যাশা করতে পারি। ইউরোপ এক খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে আছে। ভূ-রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে গেলে এখন নিজেদের কৌশল নিজেদেরই ঠিক করতে হবে। না হলে বেশিদিন নিজেদের ভাগ্য নিজেদের হাতে রাখতে পারবো না আমরা।’ ম্যাঁক্রো বলেছেন, ঘুরে দাঁড়াবার জন্য ইউরোপের এটিই শেষ সুযোগ। ন্যাটোর ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের আস্েযলই গুরুত্ব আছে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান ফরাসি প্রেসিডেন্ট। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনও ন্যাটোভুক্ত রাষ্ট্র আক্রান্ত হলে বাকিরা তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে। তিনি বলেন, ‘আমি আসলেই জানি না। আগামীকাল কি আসলেই ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের কোনও দাম থাকবে?’
তবে ম্যাঁক্রোর সঙ্গে একমত নন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। তিনি মনে করেন, ম্যাঁক্রোর ভাষা অত্যন্ত কঠোর। তার মতে, ৭০ বছর বয়সী সামরিক জোটটির ভূমিকা এখনও অপরিহার্য। ম্যাঁক্রোর এ ধরণের মন্তব্য করার কোনও ধরনের প্রয়োজনীতা ছিলো না। ন্যাটো প্রধান জেনস স্ট্যালেনবার্গ বলেছেন, দুর্বল উত্তর আটলান্টিক জোট ইউরোপকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দেবে। এসময় তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আর জার্মানি সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পেন্স। পেন্স বলেছেন, ন্যাটো সবসময়ই প্রাসঙ্গিক এবং প্রয়োজনীয় ছিলো।
নিজের সাক্ষাৎকারে ম্যাঁক্রো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সাম্প্রতিক টানাপোড়েন তুলো ধরেন। ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তুরস্কের সাম্প্রতিক সিরিয়া অভিযান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনার বিষয়টিও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে সমন্বয় কি আছে? একদম নেই। আমরা একটি ন্যাটো মিত্র রাষ্ট্রের সমন্বয়হীন আগ্রাসী কর্মকা- দেখেছি। তুরস্ক এমন একটি জায়গা, যেখানে আমাদের সবারই স্বার্থ থাকার কথা।’ সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব