শিরোনাম
◈ জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রশিবির  ◈ দু-এক দিনের মধ্যে আরও নয়জনকে সচিবপদে পদায়ন : মোখলেস উর রহমান ◈ এবার বাধ্যতামূলক অবসরে পুলিশের ৪ ডিআইজি ◈ শূন্য থাকা ৯ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ শিগগিরই ◈ ছয় মাসে যে নতুন ১৬ রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ◈ নেতা নয়, নীতি নির্ভর হয়ে দেশগঠনে কাজ করবে নতুন দল: হাসনাত আব্দুল্লাহ ◈ প্রকাশ্যে যুবদল নেতার চাঁদাবাজি করার ঘোষণার পর গ্রেফতার ৪ (ভিডিও) ◈ ২৯ মিলিয়ন ডলার নেওয়া বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সম্পর্কে যা জানাগেল ◈ ধর্মীয় উসকানিতে ঐক্য বিনষ্টের অপচেষ্টা চলছে: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ◈ স্টারলিংক বন্ধের গুঞ্জন নিয়ে যা বললেন ইলন মাস্ক!

প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:৪৪ দুপুর
আপডেট : ০৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:৪৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সোনা পাচারের দরজা চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর

নিউজ ডেস্ক : স্বর্ণ চোরাকারবারের ট্রানজিট চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।এ বন্দর দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অবাধে স্বর্ণ পাচার হচ্ছে।পাচারকারীদের সাথে বিমানবন্দর ও এয়ার ফ্রেইটের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এ পাচারকাজ।মাঝেমধ্যে ধরা পড়লেও তা পাচার হওয়া স্বর্ণের তুলনায় অতি নগণ্য। স্বর্ণ পাচারে বিমানের ক্লিনার, কর্মকর্তা, কর্মচারী জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে কর্তৃপক্ষের কাছে।চট্টগাম প্রতিনিধি

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন, সরকারি ও বেসরকারি এয়ারলাইন্স ও কাস্টমসের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক চোরাচালানচক্রের যোগসাজশে পাচার হয় স্বর্ণের বড় বড় চালান। যা নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, হালিশহরের পাচারকারীদের হাতবদল হয়ে চলে যায় ভারতে।

কাস্টমস সূত্রমতে, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাচারকালে ১৮২ কেজি (সাড়ে চার মণ) স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে, যা পাচার করা স্বর্ণের তুলনায় অতি নগণ্য। এছাড়া এ বছর বিভিন্ন যাত্রীর কাছ থেকে আরো ৩২ কেজি স্বর্ণ উদ্ধার হয়েছে। যার আনুমানিক দাম ১৩ কোটি ১৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণ ছাড়াও নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকেও পাচার হয়ে আসা স্বর্ণ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

এদিকে চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত এক বছরে স্বর্ণ চোরাকারবারের সাথে জড়িত ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি নাগরিকও রয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া এই ব্যক্তিরা স্বর্ণ বহনকারী। অর্থ সংকটে বিদেশ থেকে বাড়ি আসতে না পারা ব্যক্তিদের বিশেষ টোপ দিয়ে ব্যবহার করে চোরাচালানী চক্র। সামান্য টাকার লোভে পাচারে জড়িয়েছেন অনেকে। কিন্তু আসল পাচারকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় বরাবরই।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার সারওয়ার-ই-জামান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, অনেক সময় অতি লোভে বিমানবালা ও কর্মকর্তারা পাচারে জড়িয়ে যায়। এজন্য অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর শাস্তিও হয়েছে। অনেকে চাকরিও হারিয়েছে। বাংলাদেশে বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর বিমানের ক্লিনিং, যাত্রীদের চেকইন, লাগেজ বহন ইত্যাদি গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং কাজ বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স করে। এ সময় তারা স্বর্ণপাচারের সাথে জড়িয়ে যায়।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপ-কমিশনার (পতেঙ্গা-কর্ণফুলী) ইয়াসির আরাফাত বলেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে জব্দ হওয়া স্বর্ণের সাথে আটক আসামিদের পতেঙ্গা থানায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। কিন্তু দেখা যায়, আটক আসামিরা শুধুমাত্র স্বর্ণের চালান বহনকারী। পাচারের সাথে আর্ন্তজাতিক চক্র জড়িত।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাই, সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, ওমান থেকে স্বর্ণ আসে বাংলাদেশে। বহনকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি, পটিয়া, সাতকানিয়া, হাটহাজারী, রাউজানের লোক।

পুলিশের কাছে থাকা তথ্যমতে, শাহ আমানত বিমানবন্দর দিয়ে আসা স্বর্ণ পাচার হয়ে চলে যায় ভারতে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে অনায়াসে সীমান্ত পার হয় স্বর্ণের চালান।

জানা গেছে, এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়েই স্বর্ণ হাতবদল হয়। বিদেশ থেকে পাচারকারীরা এ স্বর্ণ কাকে বুঝিয়ে দেবে তার নাম-ঠিকানাও দেয় না বহনকারীকে। হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ভাইবারের মাধ্যমে ছবি দেওয়া হয়, পাচার হয়ে আসা স্বর্ণের মূল গ্রহণকারীকে। সে-ই খুঁজে নেয় বহনকারীকে। এভাবে পাচার হয় স্বর্ণ। এছাড়া বিমানবন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজশেও পাচার হয় অধিকাংশ চালান।

গত ২ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টায় ফ্লাই দুবাইয়ের এফজেড ৫৮৯ ফ্লাইটের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শেষ করে বের হওয়ার সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সুইপারের জুতার ভেতর লুকানো অবস্থায় ৩৬টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এছাড়া গত ১৮ অক্টোবর শাহ আমানত বিমানবন্দরে ১৫ কেজি ওজনের ১৩০টি স্বর্ণের বারসহ মো. জয়নাল নামে এক যাত্রীকে আটক করে চট্টগ্রাম কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ। ওই যাত্রী অভিনব কায়দায় চার্জার লাইটের ব্যাটারির বদলে স্বর্ণ আনে। জব্দ করা এই স্বর্ণের মূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর শাহ আমানত বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানে আসা যাত্রীর কাছ থেকে ছয়টি স্বর্ণ বার (৬৮৫ গ্রাম) জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক মূল্য ৪৮ লাখ টাকা।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দর কাস্টমসের উপ-কমিশনার রেয়াদুল ইসলাম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, বিমানবন্দরে কাস্টমসের কড়াকড়ি সত্ত্বেও কিছু যাত্রী পাচারের সাথে জড়িয়ে পড়ে। আবার বিমানবন্দরে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাথে যোগসাজশেও পাচারকারীরা স্বর্ণ চোরাচালানের চেষ্টা করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়