ওয়ালি উল্লাহ : চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট নেতাদের সতর্ক করা হবে। তাতেও কাজ না হলে অব্যাহতি অথবা দল থেকে বহিষ্কারের মতো কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এরই মধ্যে কাজ শুরুও হয়েছে বলে দলের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়। দৈনিক আমাদের সময়
সূত্র মতে, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরীনকে সতর্ক করা হয়েছে। একই সঙ্গে পিরোজপুর জেলা বিএনপির পুনর্গঠন প্রক্রিয়া থেকে তাকেসহ তার টিমকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বরিশাল বিভাগ ছাড়াও রাজশাহী, সিলেট, ময়মনসিংহের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িদের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ কেন্দ্রে জমা পড়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, যেখানে অভিযোগ উঠবে সেখানেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে টিম যাবে, তদন্ত করবে। টিমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থাও নেয়া হবে।
আলাল নিজেও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিভিন্ন জেলায় সফর করছেন। কমিটি পুনর্গঠনসংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে গত শনিবার তিনি সেখানে গিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সম্প্রতি সতর্ক করে বিলকিস জাহান শিরীনকে দেওয়া দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত একটি সতর্কীকরণ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আপনাদের মধ্যে (সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকবৃন্দের) কলহের কারণে প্রাপ্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আপনাকে নির্দেশক্রমে সতর্ক করা হয়েছে। এর পর থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় যথাযথ দলীয় শৃঙ্খলা অনুসরণ করার জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।’ একই সঙ্গে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ‘বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসম্পাদকরা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পিরোজপুর জেলা বিএনপি পুনর্গঠন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে। উক্ত জেলার সাংগঠনিক পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র কর্তৃক নির্ধারিত হবে।’
এক নেতা জানান, বরিশাল সাংগঠনিক টিমের বিরুদ্ধে অন্যান্য অভিযোগ ছাড়াও সমন্বয়হীনতারও অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে এই টিম কোনো কমিটিই উপহার দিতে পারেনি।
গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলকে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেন। এ কাজে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদকদের দায়িত্ব দেন তিনি। একই সঙ্গে তারেক রহমান নিজেও স্কাইপের মাধ্যমে ৮২টি সাংগঠনিক জেলা ও মহানগর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সবার মতামতকে আমলে নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত দেন সাংগঠনিক টিমকে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা প্রথমে কিছুটা নিরপেক্ষ থেকে কাজও করেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক টিমের বিরুদ্ধে অনৈতিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতি, প্রভাব খাটিয়ে কিছু নেতাকে সুবিধা দেওয়া, বিশেষ কোনো নেতাকে চাপে রাখা, নিজের বলয় সৃষ্টি ইত্যাদি নানা অভিযোগ ওঠে। দলের হাইকমান্ডকেও বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া এসব অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মাঠে কাজ করছেন। এরই মধ্যে একাধিক টিম সাংগঠনিক টিমের বিরুদ্ধে প্রতিবেদনও জমা দিয়েছেন।
দলের সিনিয়র দুই নেতা বলেন, যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এসেছে কেন্দ্রে। মাদারীপুর কমিটি গঠনে দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান একটি পক্ষে কাজ করায় তাকেও সরিয়ে দিয়ে তা তদন্ত করতে একজন যুগ্ম মহাসচিবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ডব্লিউএস/এসবি
আপনার মতামত লিখুন :