মাজহারুল ইসলাম : বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম ফের পেছাচ্ছে। সর্বোচ্চ দরদাতা সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্সের দরপত্র ছিলো এক কোটি ৭০ লাখ টাকা। সে অনুযায়ী তাদের কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে দাঁড়ায় এ প্রতিষ্ঠান। এরফলে ভবন ভাঙার কাজ শুরু হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। জাগোনিউজ
বিজিএমইএ ভবন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রথম অবস্থায় কন্ট্রোল ডিমোলেশিং (নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ) পদ্ধতিতে ভবন ভাঙার ঘোষণা দিয়েছিলো রাজউক। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে সনাতন পদ্ধতিতে ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। অর্থাৎ ম্যানুয়ালি বিভিন্ন যন্ত্র ব্যবহার করে হাতে ভাঙা হবে বিজিএমইএ ভবন। সেই লক্ষ্যে দরপত্র মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে রাজউক। তারা এ ভবন ভাঙার কার্যক্রম থেকে সরে আসায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের ফোরস্টার গ্রুপকে কাজটি দেয়া হয়েছে। ফোরস্টার গ্রুপের দরপত্র এক কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
রাজউক সূত্রে জানা গেছে, শেষ মুহূর্তে সরে যাওয়ায় সালাম অ্যান্ড ব্রাদার্সের কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে টাকা কেটে নিয়েছে রাজউক। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের হাতিরঝিল প্রকল্প পরিচালক এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস বলেন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা প্রতিষ্ঠান ফোরস্টার গ্রুপকে কাজ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কার্যাদেশ দিলেই তারা কাজ শুরু করবে। কার্যাদেশ দেয়ার পর ছয় মাসের মধ্যে ভবনটি ভাঙতে হবে। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাজউকের এক কর্মকর্তা বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে ভবনটি ভাঙার পক্ষে রাজউক। কারণ নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে ভবনটি ভাঙার সক্ষমতা রাজউকের নেই। এটি করতে হলে বিদেশি সাহায্যের দরকার হবে। এতে যে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ হবে, সেই টাকা বিদেশে চলে যাবে। আর সনাতন পদ্ধতিতে ভবনটি ভাঙলে রাজউকের আয় হবে। পাশাপাশি যারা ভবনটি ভাঙার কাজ করবে অর্থাৎ যে প্রতিষ্ঠান কাজটি করবে তারাও লাভবান হবে।
সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিলের মধ্যে বিজিএমইএ ভবন সরিয়ে নিতে সময় দিয়েছিলেন আদালত। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সময় পার হওয়ার পর নির্দেশনা বাস্তবায়নে গত ১৬ এপ্রিল মাঠে নামে রাজউক। বিজিএমইএ ভবনে অভিযানে আসে রাজউক। প্রথম দিনই ভবনে থাকা বিভিন্ন অফিসের মালামাল সরিয়ে নিতে সুযোগ দিয়ে পরবর্তীতে ভবনটি সিলগালা করে দেয়া হয়। পরে অবশ্য আরও কয়েক দফা সুযোগ দেয়া হয় মালামাল সরানোর জন্য।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পের ক্যান্সার’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে বিজিএমইএ নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হলো। পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। এরপর ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় ভবনটিতে তালা ঝুলিয়ে দেয় রাজউক।