মাজহারুল ইসলাম : বরিশালে শিরিন খানম (৩৫) নামে এক নারীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওষুধ ব্যবসায়ী ছিলেন। রোববার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর বান্দ রোডে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান 'শিরিন মেডিকেল হল'-এ অসুস্থ হওয়ার কিছুক্ষণ পর তিনি মারা যান। মৃত্যুর আগে দুইবার ফেসবুক লাইভে তিনি তার সমস্যার কথা তুলে ছিলেন।
ফেসবুক লাইভে কথা বলার কিছু সময় পরই শিরিন তার ফার্মেসিতে রহস্যজনকভাবে অসুস্থ হয়ে পরেন। অচেতন অবস্থায় তাকে শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে গেলে কত্যর্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
পারিবারিক সূত্র জানায়, এক সন্তানের জননী শিরিন ডিভোর্সি ছিলেন। দীর্ঘদিন ফার্মেসি ব্যবসার পাশাপাশি নানান কর্মকাণ্ডে আলোচিত হয়ে তিনি টিকটকশিরিন নামে পরিচিত ছিলেন। মৃত্যুর আগে ফেসবুক লাইভে তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে উৎখাতসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা এবং মৃত্যুর হুমকি দেয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। কিন্তু শিরিনের মৃত্যুর পরপরই তার ফেসবুক আইডিটি ডিঅ্যাক্টিভ হয়ে যায়। তবে এর আগেই অনেকে ফেসবুক লাইভের তার ভিডিওটি সংরক্ষণ করেন। ওই ভিডিও চিত্রে শিরিন তার মালিকানাধীন ফার্মেসিটি উৎখাতের ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে স্থানীয় ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, পার্শ্ববর্তী ওষুধ ব্যবসায়ী জনিসহ বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছেন।
ফেসবুক লাইভে তাকে (শিরিন খানম) মেরে ফেলার হুমকি দেয়ার কথাও বলা হয়। এমনকি ‘শিরিন ফার্মেসি’ নামের তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি ছাড়ার জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ বেশ কয়েকজন তাকে চাপ প্রয়োগ করেন। আগামী ১ নভেম্বরের মধ্যে তিনি দোকান ছেড়ে না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে।
ফেসবুক লাইভে শিরিন খানম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, জনি ও তার বউ, কয়েস মিয়া, রনি, মারুফ এবং তার এক বন্ধু আলো আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেষ করে দিল। অনেক অনুরোধ করেও দোকানটি রক্ষা করতে পারলাম না। আমি বিচারের ভার জনগণের ওপর দিয়ে গেলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিরিন খানমের ফেসবুক লাইভের কথোপকথনে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরসহ কয়েক ব্যবসায়ী ফেঁসে যেতে পারেন। তাই তার (শিরিন) মৃত্যুর পর ফেসবুক আইডি বন্ধ করে সেই কথোপকথন মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেকের ধারণা, শিরিনের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেউ নিয়ে ফেসবুক আইডিটি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু পুলিশের তৎপরতা শুরু হলে রাতেই শিরিনের আইডিটি ফের সচল হয়।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানান, শিরিন খানমের মৃত্যুর ঘটনায় তার ভাই ইউসুফ মৃধা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :