কামরুল হাসান মামুন : বাংলাদেশের পাবলিকের ট্যাক্সের টাকায় যা কিছু চলে সব কিছুই রুগ্ন। যেমন বাংলাদেশ বিমান, বাংলাদেশ রেলওয়ে, টেলিটক, বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ নৌপরিবহন সংস্থা, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ ইত্যাদির কোনোটিই লাভবান সংস্থা নয়। সবগুলোর একটি কমন জিনিস হলো এগুলোর পরিচালনার দায়িত্বে সরকারি কর্মকর্তারা। এই কর্মকর্তারা এসবের দায়িত্ব পেলে এগুলোকে টাকা কমানোর খনি ভেবে এক জীবনে যা কামানো যায় তা এমনভাবে কামায় যেন পরবর্তীতে তার চৌদ্দগোষ্ঠী বসে খেতে পারে। অথচ এদের যদি দেশের প্রতি মায়া থাকতো আর একটু আন্তরিকতা থাকতো তাহলে এর প্রত্যেকটিই লাভবান প্রতিষ্ঠান হতে পারতো। এক টেলিটক দিয়েই বিশাল লাভ করতে পারতো। টেলিটকে যারা চাকরি করে তারাও ওখানে চাকরি করার কারণে একেকজন গর্বিত কর্মকর্তা হতে পারতো। দেশের যুবকেরা ওখানে চাকরির জন্য মুখিয়ে থাকতো। একই কথা বলা যায় বিমান অথবা রেলওয়ে অথবা অন্যান্য সংস্থার ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদিয়ালয় ও সরকারি স্কুল, কলেজও একই পথের যাত্রী। এগুলোর মান দিন দিন নিম্ন গামী। খুব বেশি দূরে নেই আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্তমান প্রাইমারি স্কুলের হাল হবে যেখানে কোনো শিক্ষিত ও আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারের কেউ আর ওখানে পড়ার জন্য স্বপ্ন দেখবে না। গত ৩০-৪০ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে উদাহরণ হিসেবে নিয়ে একটু গবেষণা করলেই টের পাওয়া যাবে। ৭৩-এর অধ্যাদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত বাকি ৪১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কীভাবে নিয়োগ পায় আর কারা পায় সেটা স্টাডি করলেও অনেক কিছু ফকফকা হয়ে যাবে। এমনকি ৩০ বছর যাবৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৭৩-এর অধ্যাদেশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সেগুলো স্টাডি করলেও মানের নিম্ন গামীতার চিহ্ন পাওয়া যাবে। একটু স্ট্যাটিসটিকাল এরর থাকতে পারে তবে মোটা দাগে এটাই বাস্তবতা।
আমরা মনে হয় একটু বেশিই থার্মোডিনামিক্সের দ্বিতীয় সূত্র মেনে চলছি। এই সূত্র মতে, ইকুইলিব্রিয়ামে পৌঁছানোর জন্য সব পষড়ংবফ সিস্টেমের এনট্রপি সবসময় বাড়তে থাকবে অর্থাৎ তাদের ফরংড়ৎফবৎ বাড়তে থাকবে। আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও পষড়ংবফ সিস্টেম ভাবতে পারি এবং এদের এনট্রপি এনট্রপি বা ফরংড়ৎফবৎ কেবল বেড়েই চলেছে। এখন বলতে পারেন সূত্র যা বলে তাহাই যদি ঘটে থাকে সমস্যা কোথায়? মনে এনট্রপি কমানো যায়। সেজন্য কাজ করতে হয়। যেমন রেফ্রিজারেটরকে বাইরের তাপমাত্রা থেকে অনেক বেশি ঠা-া রাখা যায় এবং সেটা করা হয় কাজের মাধ্যমে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও কিছু মানুষকে নিয়োগ দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সঠিকভাবে চালিয়ে অর্ডার মেইনটেইন করা। সমস্যা হলো চালানোর জন্য যেই ইন্টারনাল ধপঃড়ৎ নিয়োগ দেয়া হয় তারা বরং সিস্টেমের অর্ডার আরও কমিয়ে দেয়। একই কথা খাটে আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে। সরকারি হওয়া মানেই যেন সরকার কি মাল দরিয়া মে ঢাল। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :