ডেস্ক রিপোর্ট : আজ ৩১ আগস্ট প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চল্লিশা। অনুষ্ঠানটি জাঁকজমকপূর্ণভাবে আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিল জাতীয় পার্টি। বলা হয়েছিল, রাজধানী ঢাকার প্রতিটি থানায় থানায় আয়োজন করা হবে গণভোজ, তাতে থাকবে খিচুড়ি আর গরুর মাংস। তবে সে আয়োজন থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে দলটিকে।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, কেন্দ্রীয়ভাবে গরু দিয়ে চল্লিশার গণভোজের ব্যবস্থা করলেও রাজধানীর থানা-ওয়ার্ডগুলোকে চল্লিশা আয়োজন করতে বলা হয়েছে সাধ্যমতো। তাতে রাজধানীর বেশিরভাগ থানাতেই মুরগির মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্নার আয়োজন চলছে এরশাদের চল্লিশায়।
এরশাদের চল্লিশার ঠিক আগের দিন শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকজন নেতার বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করেছে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
দলীয় ফান্ডে টাকা না থাকলেও দলীয় সংসদ সদস্য ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের লাখ টাকা চাঁদা হিসাব করে সোয়া কোটি টাকা বাজেট ঠিক করা হয়েছিল এরশাদের চল্লিশার জন্য।
চল্লিশার এক সপ্তাহ আগেও জানা যায়, কোটি টাকার বেশি চাঁদা উঠেছে। অর্থাৎ নির্ধারিত বাজেটের প্রায় সমপরিমাণ চাঁদা জাপার তহবিলে জমা হয়ে গেছে। তবু গরুর মাংস নয়, মুরগির মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্নার প্রস্তুতি চলছে রাজধানীর থানাগুলোতে।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজন করা হবে এরশাদের চল্লিশার মূল অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানের জন্য বেশ কয়েকটি গরুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির এক নেতা এরই মধ্যে দুইটি গরুও দিয়েছেন কেন্দ্রের এই আয়োজনের জন্য। আর চল্লিশার জন্য সংগৃহীত চাঁদা তো আছেই।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজধানীর প্রতিটি থানাতেই কেন্দ্রীয়ভাবে একটি করে গরু দিতে চেয়েছিলেন জাতীয় পার্টির নেতারা। তবে শেষ সময়ে এসে জানা যাচ্ছে, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের জানানো হয়েছে, তারা যেন নিজেদের সাধ্যমতো আয়োজন করেন চল্লিশার।
সেক্ষেত্রে যেসব থানায় গরু কোরবানি করা সম্ভব হবে না, সেসব থানায় মুরগির মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্নার নির্দেশনা দিয়েছেন জাপা নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের এক জাপা নেতা বলেন, প্রতিটি থানা বা ওয়ার্ডে চল্লিশার রান্নার জন্য গরু দেয়া সম্ভব হয়নি। দল থেকে আমাদের বলা হয়েছে, যে যেভাবে পারব, সেইভাবেই যেন চল্লিশার আয়োজন করি। সেক্ষেত্রে বেশিরভাগ থানাতেই মুরগি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে তা বিতরণ করা হবে।
এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কথা বলতে অপারগতা জানিয়েছেন বেশিরভাগ জাপা নেতাই। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলাও খানিকটা কৌশল করে উত্তর দেন। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি থানায় আমরা ৫০ হাজার টাকা করে দিয়েছি।
বেশিরভাগ জায়গাতেই গরুর মাংস দিয়ে খিচুড়ি রান্না হবে চল্লিশার গণভোজের জন্য। কিছু কিছু জায়গায় মুরগি দিয়েও খিচুড়ি রান্না হতে পারে।
গত ১৪ জুলাই জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ মারা যান। সেই হিসাবে গত ২৩ আগস্ট এরশাদের চল্লিশা আয়োজনের কথা ছিল। তবে সেদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসব জন্মাষ্টমীর আয়োজন থাকায় চল্লিশার তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয়।
১৭ আগস্ট জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দলীয় সংসদ সদস্যদের সঙ্গে দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের এক যৌথ বৈঠক শেষে জানানো হয়, জন্মাষ্টমীর কারণে ২৩ আগস্টের পরিবর্তে ৩১ আগস্ট এরশাদের চল্লিশা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় পার্টি।
ওই দিন বাদ জোহর সারাদেশে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া, আলোচনা সভা ও দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :