আমিন মুনশি : মানুষ নিজের এবং তার অধীনস্থদের জন্য যা খরচ করে তা উত্তম সদকা হিসেবে পরিগণিত হয় বলে হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘অনিষ্টতা ও খারাপ থেকে বেঁচে থাকার জন্য যে ব্যক্তি নিজের জন্য কিছু খরচ করল তা তার জন্য সদকা এবং যে ব্যক্তি নিজ স্ত্রী, সন্তান-সন্তুতি ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য কিছু খরচ করল তা তার জন্য সদকা হিসেবে পরিগণিত হবে।’ (মুজামুল আওসাত: ৩৮৯৭) হজরত আবু মাসউদ আল বাদরি (রা.) বর্ণিত অপর এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় যখন কোনো মুসলমান তার পরিবারের জন্য কিছু খরচ করে, তখন তা তার জন্য সদকায় পরিণত হয়।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩৬৯)
আল মিকদাদ ইবন মাদি কারিব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তুমি নিজে যা খাবে তা তোমার জন্য সদকা। তুমি তোমার সন্তানকে যা খাওয়াবে তা তোমার জন্য সদকা। তুমি তোমার স্ত্রীকে যা খাওয়াবে তা তোমার জন্য সদকা। তুমি তোমার চাকরকে যা খাওয়াবে তা তোমার জন্য সদকা।’ (মুসনাদে আহমাদ: ১৭২১৮) সন্তান-সন্ততির জন্য যা খরচ করা হয় তাই সর্বশ্রেষ্ঠ দান। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তুমি একটি দিনার আল্লাহর রাস্তায় খরচ করেছ, একটি দিনার দাস মুক্তির কাজে ব্যয় করেছ, একটি দিনার মিসকিনকে দান করেছ, আর একটি দিনার তোমার পরিবারের জন্য খরচ করেছ। এর মধ্যে যে দিনারটি তুমি তোমার পরিবারের জন্য খরচ করেছ; তার সওয়াব সবচেয়ে বেশি।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩৫৮)
এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, আপন স্ত্রী যা খায় তাও সদকা। হজরত সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী করিম (সা.) শুশ্রুষার জন্য তার কাছে গেলেন। যেই জমিন থেকে তিনি হিজরত করেছেন সে জমিনে মৃত্যুবরণ করতে তিনি পছন্দ করছেন না। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আমার সব সম্পত্তি অসিয়ত করতে চাই। তিনি (সা.) বললেন, ‘না। তিনি বললেন, তবে অর্ধেক অসিয়ত করি। তিনি (সা.) বললেন, না। তিনি বললেন, তবে আমি এক-তৃতীয়াংশ অসিয়ত করি। নবী করিম (সা.) বললেন, এক-তৃতীয়াংশ করতে পারো, এক-তৃতীয়াংশই অনেক। তুমি তোমার সন্তান-সন্ততিকে মুখাপেক্ষী করে রেখে যাবে, আর তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে চেয়ে বেড়াবে এর চেয়ে তাদের তুমি অমুখাপেক্ষী করে রেখে যাবে, এটিই উত্তম। তুমি পরিবারের জন্য যা খরচ করবে তাই সদকা। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমা তুলে দেবে তাও সদকা।’ (সহিহ বোখারি: ২৫৯১)
তবে ওপরে বর্ণিত সওয়াব তখনই পাওয়া যাবে, যখন কোনো মুমিন তার স্ত্রীকে পানাহার করাবে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে, দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করে, ঈমানি চেতনা নিয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :