শিরোনাম
◈ আওয়ামী লীগের দোসররা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে: মধ্যরাতে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ (ভিডিও) ◈ মধ্যরাতে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে আসছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ 'আ. লীগের বিচার না করলে জনগণ আবার আন্দোলনে নামবে' (ভিডিও) ◈ বনশ্রীতে ব্যবসায়ীকে গুলি, ২০০ ভরি স্বর্ণ লুট (ভিডিও) ◈ দেশের সব মেডিকেল কলেজে সোমবার ‘একাডেমিক শাটডাউন’ ◈ এবার জামায়াতের আমীরের বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে শিবির ◈ জুনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে নেপাল ◈ চলন্ত বাসে ডাকাতি-শ্লীলতাহানি; ভুক্তভোগী নারীর লোমহর্ষক বর্ণনা! ভিডিও ◈ মধুর ক্যান্টিনে শিবিরের উপস্থিতি মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করে: ছাত্রদল

প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ০৭:৩২ সকাল
আপডেট : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ০৭:৩২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমাদের না পিটিয়ে গুলি করে মারো, ভারতীয় বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের মুখে ক্ষোভ কাশ্মীরিদের

নূর মাজিদ : বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ার পর থেকেই ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আরো জোরালো হয়ে উঠেছে। নির্যাতনের শিকার একাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে বিবিসি। বিবিসি সংবাদদাতাকে অনেক গ্রামবাসি তাদের সারা শরীরে লাঠি এবং বিদ্যুতের মোটা তার দিয়ে পেটানো ক্ষত এবং আঘাতের চিহ্ন দেখিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অনেককেই ইলেকট্রিক শক দিয়েও নির্যাতন করা হয়েছে। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী এসব অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন এবং মিথ্যে’ বলে দাবি করেছে। বিবিসি প্রতিবেদক সামির হাশমি নির্যাতনের যেসব প্রমাণ স্বচক্ষে দেখেছেন, তা নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের প্রতিক্রিয়া নেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। খবর : বিবিসি।

কাশ্মীরে এখন যে অবস্থা চলছে একে বিবিসির সামির হাশমি বন্দুকের জোরে পুরো একটি জনপদকে অবরুদ্ধ এবং কার্যত বিরান ভূমিতে পরিণত করার জোর অভিযোগ তুলেছেন। গতকালের প্রতিবেদনে তিনি জানান, বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকারের দেয়া হিসেবেই কাশ্মীরের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, মানবাধিকার কর্মীসহ ৩ হাজার সাধারণ মানুষকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু, প্রকৃত সংখ্যা এর চাইতে বহুগুণ বেশি। বন্দীদের অনেককেই আবার কাশ্মীরের বাইরে ভারতের অন্য রাজ্যের কারাগারে বন্দি করে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কতৃপক্ষের দাবি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতিশীলতা রক্ষার আগাম সতর্কতা হিসেবে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ভারত তাদের একমাত্র মুসলিম প্রধান রাজ্যটিকে দুই ভাগে বিভক্ত করে সরাসরি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করে।

এদিকে অধিকাংশ ভারতীয়র কাছে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের যে প্রক্রিয়া বিজেপি নিয়েছে তা জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এই পদক্ষেপ দেশটির গণমাধ্যমগুলো দৃঢ়ভাবেই সমর্থন করছে। এবং অধিকাংশেই সাধারণ কাশ্মীরি জনতার ওপর পরিচালিত নির্যাতনের কোন খবর প্রকাশ করা হচ্ছেনা।

বিগত তিন দশক ধরে কাশ্মীরে যে ভারত বিরোধী বিচ্ছিন্নতাবাদি তৎপরতা চলছে তার কেন্দ্রস্থল ছিলো দক্ষিণ কাশ্মীরের বেশ কিছু জেলা। বিবিসি প্রতিনিধি জানাচ্ছেন ওই অঞ্চলের গ্রামে গ্রামে ঘুরে তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর আকস্মিক নৈশ অভিযানের সংবাদ শুনেছেন। ওই সব অভিযানের সময় অনেক মানুষকে নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে, করা হয়েছে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। ভয় এমনভাবে জনমনে কাজ করছে যে নির্যাতনের শিকার রোগীদের বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলছেন না চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা। কিন্তু, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিরা আমাকে নিজেদের শারীরিক জখম দেখিয়েছেন।

একটি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের একঘণ্টা পরেই সেনাবাহিনী প্রতিটি বাড়িতে হামলে পড়ে। এরপর গ্রামের এক ডজন পুরুষকে তুলে নিয়ে একটি মাঠে জড়ো করে। এরপর কোন প্রকার কথাবার্তা ছাড়াই তাদের নির্মমভাবে পেটাতে থাকে। এসময় আমরা অনেক অনুনয় করেছি। বলেছি আমরা কোন অপরাধ করিনি, কোন অভিযোগে আমাদের এভাবে নির্যাতন করছ? কিন্তু, সেনারা এসব কথা কানেই তোলেনি। গ্রামের ওই মাঠে নির্যাতনের শিকার হওয়া দুই জমজ ভাইয়ের একজন বিবিসি প্রতিনিধিকে নির্যাতনের ভয়ংকর বিবরণ দিয়েছেন। ওই যুবক বলেন, তারা আমার শরীরের প্রত্যেক অংশে আঘাত করেছে। তারা আমাদের লাথি মেরেছে। লাঠি এবং তার দিয়ে পিটিয়েছে অজ্ঞান হওয়ার আগ পর্যন্ত। এরপর জ্ঞান ফেরাতে ইলেকট্রিক শক দিয়েছে। আমরা যখন যন্ত্রণায় চিৎকার করছিলাম তখন আমাদের মুখ তারা কাদা দিয়ে বন্ধ করে দেয়। আমরা বলেছি আমাদের কোন দোষ নেই। একসময় কষ্টের চোটে আমি বলি, এভাবে না মেরে আমাদের বরং গুলি করো। ওই সময় ঈশ্বরের কাছেও আমি একই প্রার্থনা করছিলাম।

একইগ্রামের আরেক যুবক বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী আমাকে তাদের দিকে পাথর ছোঁড়া কিশোরদের স¤পর্কে জানতে চায়। কিন্তু সে এমন কাউকে চেনেনা বলে জানায়। তখন সেনারা তাকে পরনের সকল কাপড় খুলে ফেলার নির্দেশ দেয়। বিবস্ত্র অবস্থায় ওই যুবককেও দুই ঘণ্টা লোহার রড এবং লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। অজ্ঞান হলে শক দেয়া হয় তাকেও। ওই যুবক বলেন, ‘সেনারা যদি আবার আমার ওপর এমন নির্যাতন করে, তবে আমি আর সহ্য করতে পারবনা। আমাকেও হাতে বন্দুক তুলে নিতে হবে। এমন নির্যাতন কারো পক্ষেই দিনের পর দিন সহ্য করা সম্ভব নয়।’ সম্পাদনা : ইকবাল খান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়