শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:০৩ সকাল
আপডেট : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ০৫:০৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শীর্ষ সন্ত্রাসীরা কারাগার ও বিদেশে থেকে আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে

ইসমাঈল হুসাইন ইমু : দীর্ঘদিন বিরতির পর ফের আলোচনায় সরকারের পুরস্কার ঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীরা। কেউ বিদেশে বসে আবার কেউ জেলখানা থেকেই রাজধানীর অপরাধ জগৎ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

শীর্ষ সন্ত্রাসী কচি নেপালে, শাহাদত কলকাতায় এবং সুইডেন আসলাম জেলে বসে রাজধানীর অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা ব্যবসায়ীদের কাছে মোবাইল ফোনে চাঁদা দাবি করেন- বাহিনীর সদস্যরা স্বশরীরে গিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন। এর একটি অংশ বাহিনীর সদস্যরা রেখে বড় অংশটি পাঠিয়ে দেয়। ‘বড় ভাই’ শীর্ষসন্ত্রাসীর কাছে। এমন বিস্তর অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী ও সরকারের ২৩ পুরস্কারঘোষিত শীর্ষ সন্ত্রাসীর একজন শাহাদত দীর্ঘদিন ধরে কলকাতায় অবস্থান করছেন। কিন্তু কলকাতা বসেই ঢাকার মিরপুরের আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করে আসছে শাহাদাত। ওই এলাকার চাঁদাবাজি, খুন-খারাবি, অপহরণ, মাদক ব্যবসা, দখলবাজির সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এলাকায় তার রয়েছে বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী। সম্প্রতি ওই বাহিনীর অন্যতম সন্ত্রাসী আবু হানিফ বাদল ওরফে ডিশ বাদলকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে। গত শুক্রবার র‌্যাব-৪ একটি দল ক্যান্টনমেন্ট থানার মাটিকাটা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। ডিশ বাদল কলকাতায় থাকা ওই শীর্ষ সন্ত্রাসীর নেতৃত্বে কাজ করতো। ওই সন্ত্রাসী কলকাতা থেকে নির্দেশ দিতো আর মিরপুরে বসে কাজ করতো ডিশ বাদল। তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল ও শাহআলী থানায় একাধিক হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে ডিশ বাদল শাহাদতের সঙ্গে যোগাযোগ এবং তার নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করার কথা স্বীকার করেছে।

র‌্যাব সূত্র জানিয়েছে, কলকাতায় অবস্থানরত শীর্ষ সন্ত্রাসী ঢাকার মিরপুর, পল্লবী, ক্যান্টনমেন্ট এলাকার এক আতঙ্ক। চাঁদা দাবি, অপহরণ ও খুনের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। মিরপুর ও আশেপাশের এলাকার ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, ঠিকাদার এমনকি চাকরিজীবীদের কাছ থেকে সে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট হারে চাঁদা আদায় করে আসছিল। তার বাহিনীর অত্যাচারে ওই এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। তার নির্দেশে মিরপুরসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০টি গ্রুপ কাজ করছে। সেক্টর ভাগ করে এরা চাঁদা সংগ্রহ করে থাকে।

এছাড়াও এক গ্রুপ বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, ঠিকাদারের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সরবরাহ করে। আরেক গ্রুপ দাবিকৃত চাঁদা আদায় করতো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে। পরে সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে কলকাতায় পাঠিয়ে দিতো। এ ছাড়া আরেকটি গ্রুপ আছে যারা কিলার বাহিনী নামে পরিচিত।

এদিকে পুরান ঢাকার শ্যামপুর, আর্শ্বিন গেট, আইজি গেট, ফরিদাবাদ, পোস্তগোলা ও আশপাশ এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কচি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর্নধার, ব্যবসায়ী ও অবস্থা সম্পন্ন লোকে ফোন করে চাঁদা দাবি করে। এ্যামাউন্ট কত হবে এবং কে টাকা সংগ্রহ করতে যাবে তার নাম বলে দেয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ব্যার্থ হলে পরিনতি নির্ঘাত মৃত্যু বলেও জানিয়ে দেয়। তার আগে এলাকার অবস্থা সম্পর্কে আপডেট জানাতে একটি গ্রুপ কাজ করে। তারাই শিকারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থাও জানিয়ে দেয়।

কাসিমপুর কারাগারে আছেন শীর্ষ সন্ত্রাসী সুইডেন আসলাম। তারা এলাকা তেজগাঁও শিল্প এলাকা, সাতরাস্তা, রাজাবাজার,পূর্ব রাজাবাজার কারওয়ার বাজার, ফার্মগেট পান্থপথ, গ্রীন রোড শুক্রাবাদ ও ধানমন্ডি ২৭ নম্বরসহ আশপাশ এলাকা। তার নির্দেশনা অনুযায়ী বাহিনীর সদস্যরা ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের কাছ থেকে চাঁদার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে কারাগারে পাঠানো হয়। উল্লেখিত এলাকার ব্যবসায়ীরা এই বাহিনীর অব্যাহত উৎপীড়নে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. মইনুর রহমান বলেন, এমন অভিযোগ সম্প্রতি পাচ্ছি। অভিযোগের সতত্যতা যাচাইয়ের জন্য পুলিশের একটি টিম কাজ করছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়