রাশিদ রিয়াজ : প্রাচীন ভারতে যাঁরা গোমাংস খেতেন, তাঁদের অস্পৃশ্য বলা হত। তবে ‘দলিত’ শব্দের উল্লেখ সেই সময়ের লেখালেখিতে ছিল না। জানালেন সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ গোপাল। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেলের উপস্থিতিতে ‘ভারত কি রাজনৈতিক উত্তরণ’ এবং ‘ভারত কে দলিত বিমর্ষ’ বই দুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কৃষ্ণ গোপাল বলেন, ‘ব্রিটিশদের ষড়যন্ত্রেই দলিত শব্দটি সমাজে প্রচলিত হয়েছে। ওদের বিভাজন করে শাসনের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে।’ দলিত শব্দের উদ্ভাবন বোঝাতে মুসলিম এবং খ্রিস্টানদেরও জড়িয়েছেন তিনি।
যার ফলে এনডিএ শরিক জেডিইউ অসন্তুষ্ট হয়েছে। সঙ্ঘ নেতা বলেন, ছুঁৎমার্গের কথা বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয়, যারা গোমাংস খেত, তাদের অচ্ছুৎ বলা হত। বি আর আম্বেদকরও তেমনই লিখে গেছেন। এরপর ছুঁৎমার্গ ক্রমে এমন বেড়ে ওঠে যে, সমাজের একটা বড় অংশের মানুষকে অস্পৃশ্য বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা দীর্ঘদিন অপমান, হেনস্থা, দমন–পীড়নের শিকার হন। সঙ্ঘ নেতার বক্তব্য, রামায়ণ রচয়িতা ঋষি বাল্মিকী দলিত নন, শূদ্র ছিলেন। তাঁর মতো অনেক ঋষি শূদ্র হলেও, সমাজে সম্মানিত ছিলেন। হিন্দু ধর্মের চারটি বর্ণের অন্য তিনটি ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যদের থেকে শূদ্রদেরই সর্বনিম্ন গণ্য করা হয়। যদিও ১৯৫৫–এ আইন করে অচ্ছুৎদের দমনপীড়ন বিরোধী আইন হয়েছে। পরে ওই আইনেরই নাম হয়েছে নাগরিক নিরাপত্তা আইন।
ছুঁৎমার্গ বোঝাতে গিয়ে ভারতে প্রথম ইসলামি আক্রমণের প্রসঙ্গও তুলেছেন সঙ্ঘ নেতা। এবং সেখানেই বিতর্ক তৈরি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, অষ্টম শতাব্দীতে সিন্ধের হিন্দু রাজা দাহিরের শাসনকালে তাঁর রাজ্য আক্রমণ করেছিলেন মহম্মদ বিন কাশিম। যুদ্ধে হেরে যান দাহির। তখন রাজরানী এবং রাজ পরিবারের সমস্ত মহিলা আত্মহত্যা করেন যাতে ‘অচ্ছুৎ’ শত্রুরা তাঁদের স্পর্শ না করেন। কৃষ্ণ গোপাল এ–ও বলেন, খ্রিস্টান এবং মুসলিমদে অন্যতম লক্ষ্য অন্যদের ধর্মান্তরিত করা। এতে বিতর্ক ছড়িয়েছে আরও। জেডিইউ–র সাধারণ সম্পাদক পবন কুমারের প্রতিক্রিয়া, ‘অন্যদের দোষারোপ না করে নিজেদের বিষয়গুলি তলিয়ে দেখা দরকার। নিজের সমস্যার জন্য অন্যদের দিকে আঙুল তোলা হিন্দুত্ব–বিরোধী।’
দলিতদের সংরক্ষণ প্রসঙ্গে এর আগে একটি আলোচনা চেয়ে বিতর্ক খাড়া করেছিলেন সঙ্ঘপ্রধান মোহন ভাগবত। বলেছিলেন, কারা শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণের পক্ষে, কারা বিপক্ষে তাই নিয়ে আলোচনা হোক। ২০১৫–য় বিহার বিধানসভা নির্বাচনের মুখে তেমন কথা উঠেছিল। এর ফল ভাল হয়নি বিজেপি–র পক্ষে। আজকাল