এটিএম গোলাম কিবরিয়া : তিনজন মোজাফফর আহমেদকে চিনতাম ছোটবেলায়। প্রথমজন সন্দ্বীপের লোক, ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও আমাদের নজরুলের বন্ধু। হাবিলদার নজরুল কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনালের অনুবাদ করেছিলেন ‘কাকাবাবু’র প্রেরণায়। আরেকজন মোজাফফর ছিলেন ইকোনোমিস্ট, নিপাট ভদ্রলোক, আইবিএর প্রফেসর ও টিআইবির চেয়ারম্যান। সদর্থে যাদের আমরা সুশীল বলি, তেমন একজন। ২৩ আগস্ট যিনি মারা গেলেন, তিনি ন্যাপ মোজাফফর। আদর্শিক ও নিরাভরণ এক জীবনের অধিকারী। প্যারালাল কোনো ইউনিভার্সে তিনি হয়তো করবিন বা স্যান্ডার্সের মতো কেউ হতেন। ভদ্রলোক দুই হাজার পনেরোতে স্বাধীনতা পদক প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, বদরুদ্দীন উমর ছাড়া আর কেউ আমার জানামতে এই কাজ করেননি। এই তিনজনের মাঝে দুজন কমিউনিস্ট আর একজন উদার গণতন্ত্রী।
সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন এরা, কিন্তু এদের কনভিকশন জেনুইন। সিম্পল লিভিং হাই থিংকিংয়ে ঈমান আনা কলোনীর শেষ যুগের তরুণ তারা। মানুষে বিশ্বাস রাখা বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বুদ্ধিজীবী, এই ধরনের লোকদের আমি বলি সেক্যুলার ঋষি। আমি একধরনের বেদনা অনুভব করি এদের জন্য, এক প্রকার ঈর্ষাও অনুভব করি। এই বৈরাগ্য আমাদের আয়ত্তে আসবে না জানি কোনোদিনও। এই তিন মোজাফফরকে নিয়ে যখন লিখছি তখন একজন প্রফেসর জাফরের লেখা ঘুরে বেড়াচ্ছে অনলাইনে। সাতশ বছর আগে মৌলভী রুমি বলেছিলেন, রাজাদের মাঝে যারা উৎকৃষ্ট তারা যায় প-িতের কাছে আর প-িতদের মাঝে যারা নিকৃষ্ট তারা যায় রাজদরবারে। আর আমি ভাবছি, মোজাফফরদের থেকে ঠিক কোন পথ ধরে আমরা জাফরে এসে পতিত হলাম? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :