আমিন মুনশি : ডা. জাকির নায়েক গত ৮ আগস্ট মালয়েশিয়ায় একটি সেমিনারে বক্তব্য রেখেছিলেন। পরে তার কিছু মন্তব্য কাটছাঁট করে সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়। আর তাতেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে ইসলামবিদ্বেষীরা। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে ডা. জাকির নায়েককে আইনের আওতায় আনতে মালয় সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে থাকে। এ চাপাচাপি ক্রমাগত বাড়ছে; বৈ কমছে না।-আলোকিত বাংলাদেশ
মন্তব্য-১
তাকে বেশ কিছুদিন ধরে কট্টর ইসলামবিদ্বেষীদের পক্ষ থেকে ‘নতুন গেস্ট’ (বাংলায় যাকে নতুন পাগল বলা হয়) বলে তিরস্কার করা হচ্ছিল। নতুন অতিথিকে তার দেশে ফেরত পাঠাতে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছিল। তাদের এমন অযৌক্তিক কথাবার্তার জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাকে নতুন অতিথি বলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার আগে চায়নিজদের আগে পাঠানো উচিত। কারণ চায়নিজরা এ দেশে অতিথি হয়েই এসেছিল। তারপর তারা নাগরিক হয়। সুতরাং নতুন অতিথিকে ফেরত পাঠানোর আগে পুরোনো অতিথিকে ফেরত পাঠানো যৌক্তিক।’
মন্তব্য-২
দ্বিতীয় মন্তব্যটি করেন ইসলামের মহানুভবতা নিয়ে। বিষয়টি পরিষ্কার করতে একটি উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় মাত্র ৬.৫ ভাগ মানুষ হিন্দু। তবু তারা ইন্ডিয়ান মুসলিমদের থেকে ১০০ গুণ বেশি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। এত বিশাল সুবিধা নিয়েও সাপোর্ট করার সময় তারা মাহাথির মুহাম্মদের চেয়ে নরেন্দ্র মোদিকেই প্রেফার করে। আমি বলছি না যে, এটা বন্ধ করতে হবে। বোঝাতে চাচ্ছি, ইসলাম যথেষ্ট সহনশীল। অন্যায়ভাবে কাউকে আঘাত করে না।’
তার এই দুই মন্তব্যকেই লুফে নেয় বিরোধীরা। তারা মনে করছে, এসব কথার মাধ্যমে সম্প্রীতির মালয়েশিয়ায় জঙ্গিবাদের সূচনা হবে। আর তারা সেই কাটছাঁট মন্তব্যের ক্লিপ হাওয়ার বেগে ছড়িয়ে দেয় নেট দুনিয়ায়। মুহূর্তেই হইচই পড়ে যায় সর্বত্র। সুযোগকে কাজে লাগাতে মরিয়া হয়ে ওঠে অনেকেই। ড. জাকির নায়েক যে নতুন করে কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হচ্ছেন, তা মোটামুটি নিশ্চিত।
ডা. জাকির নায়েকের চিন্তাচেতনা ভিন্ন হতে পারে। আমরা তার মতাদর্শের সঙ্গে পূর্ণ একমত নাও হতে পারি। এরপরও মুসলিম হিসেবে তিনি আমাদের ভাই। তিনি আজ মজলুম। একের পর এক তার শত্রুর তালিকা লম্বা হচ্ছে। তার সঙ্গে যারা শত্রুতা করছে তারা কেউ ব্যক্তিগত আক্রোশে করছে না, সম্পদের জেরে শত্রুতা তৈরি হচ্ছে না, বৈরিতা সৃষ্টি হচ্ছে শুধু ইসলামের কারণে। তার লেকচারের এফেক্ট দেখেই বিরোধীরা রক্তচোষা শত্রুতে পরিণত হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশ থেকে তেমন কিছু করতে পারব না। কেউ ভুলের ঊর্ধ্বে নন। সুতরাং তাকেও ভুলের ঊর্ধ্বে ভাবি না। এই মুহূর্তে আমরা তার জন্য যা করতে পারি তাহলো তার জন্য প্রাণ খুলে দোয়া করা। যাতে সব প্রতিকূলতা তিনি কাটিয়ে উঠতে পারেন।
আপনার মতামত লিখুন :