কামরুল হাসান মামুন : ‘মাধ্যমিকে বাধ্যতামূলক হচ্ছে কর্মমুখী শিক্ষা’ : ওয়াউ! এইসব ব্রিলিয়ান্ট আইডিয়া কার মাথা দিয়ে বের হয়? ওই কমিটিতে কোন কোন শিক্ষাবিদরা ছিলেন, একটু জানতে চাইছিলাম। এইটা যদি করা হয় বাংলা মিডিয়াম ছেড়ে ছেলেমেয়েরা আরো বেশি করে ইংরেজি মাধ্যমে যাবে, যারা শেষ পর্যন্ত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের টার্গেট হবে। আমাদের কেন নতুন নতুন ফর্মুলা আবিষ্কার করতে হয়? জার্মানিতে দুই ধরনের স্কুল আছে। যারা কর্মমুখী শিক্ষা চাইবে তারা কারিগরি স্কুলে যেটাকে তারা ভধপযযড়পযংপযঁষব বলে সেখানে পড়তে যায়। যারা বিজ্ঞানী হবে, ডাক্তার হবে, আর্চিটেক্ট হবে তাদের কেন ওসব সাবজেক্ট পড়তে হবে। এর আগে আইসিটি কোর্স নামে আরেক গজব নাজিল করছিলো।
কই ইংরেজি মাধ্যমে তো এসব করে না। আমরা কি ব্রিটিশদের চেয়ে বেশি বুঝি নাকি? আমাদের উচিত আমাদের কারিগরি স্কুলগুলোকে শক্তিশালী করা। যারা নাপিত হবে, দর্জি হবে, কার্পেন্টার হবে, ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হবে, মেকানিক হবে তারা ওসব স্কুলে পড়বে। আমরা কেন জার্মান মডেলকে অনুকরণ করি না? আর সাধারণ স্কুল কেন ইংরেজি মাধ্যমের ংুষষধনঁং অনুসরণ করে না? তাহলে বাংলা ইংরেজি মাধ্যমের গ্যাপটাও কমে যেতো। কমিটিতে ঢুকে কিছু একটা নতুন আবিষ্কার করতেই হবে? বুঝতে পারছি টাকা জায়েজ করার চেষ্টা। কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভাববেন না?
২. আমাজন জঙ্গল পুড়ছে, সুন্দরবন মারার ব্যবস্থা হচ্ছে, এন্টার্টিকার বরফ গলছে, ফসিল ফুয়েল পুড়ছে, পলিথীন দিয়ে পৃথিবী সয়লাব হচ্ছে, মাটিতে পানির স্তর নামছে। পৃথিবীর আয়ু আমরাই কমিয়ে ফেলছি। আমরা বেশি করে মানুষ জন্ম দিচ্ছি। সেই অতিরিক্ত মানুষের জন্য বেশি ফসল ফলানো লাগছে। সেই জন্য জমিকে ঊর্বর করতে বেশি করে কেমিক্যাল সার দিচ্ছি আর ফসল রক্ষায় পোকামাকড় মারার জন্য বিষ দিচ্ছি। সেই কেমিক্যাল আলটিমেটলি আমাদের শরীরে ঢুকছে আর সেই বিষে প্রাকৃতিক মাছ আর ব্যাঙ। উন্নত জীবনের নামে পলিথীন আবিষ্কার হলো আর সেটাই হচ্ছে এখন আমাদের কাল। উন্নত জীবনের জন্য মাটির নিচে যতো প্রাকৃতিক সম্পদ আছে ইনক্লুডিং পানি তা তুলে ফেলছি। আবাসিক ব্যবস্থার জন্য বন উজাড় করছি আর উন্নত জীবনের জন্য গাছ কেটে আসবাবপত্র বানাচ্ছি। উন্নত জীবনের জন্য ফসিল ফুয়েল পুড়িয়ে বাতাসে কার্বনের (কার্বন ডাই অক্সাইড) পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাতাসে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড বাড়িয়ে দিচ্ছে গ্লোবাল তাপমাত্রা। এর ফলে এন্টার্টিকায় বরফ গলছে, সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা বাড়ছে। ‘এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমিÑ নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার’ - সুকান্ত ভট্টাচার্য! সত্যি সত্যিই কি আমরা এই অঙ্গীকার করছি? আমরা তো বরং নিশ্চিত করছি যেন এ বিশ্ব আগত শিশুর জন্য মৃত্যুকূপ হয়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :