স্বপ্না চক্রবর্তী : কসমেটিক উন্নয়ন নয়, গ্রাম-শহরের সত্যিকার ব্যবধান কমাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাস্তবসম্মত কর্মসূচি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি লুটেরা শ্রেণিকে ধনী বানানোর পরিবর্তে গ্রামের অবহেলিত মানুষের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রাখার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্য অর্জনে কাজ করতে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহবান জানান।
বুধবার শিল্পমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান। রাজধানীর মতিঝিলে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড এর আয়োজন করে। সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান একেএম কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ।
এতে অন্যদের মধ্যে সোনালী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মোঃ নূরুল আলম তালুকদার, মোঃ ইমতিয়াজ আহমেদ, ড. দৌলতুন্নাহার খানম বক্তব্য রাখেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে কর্মসংস্থান সৃজনে ব্যাংকিংখাতের বিরাট অবদান রয়েছে। বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সোনালী ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাংলাদেশের বিশাল যুব জনগোষ্ঠিকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদেরকে উৎপাদন ও উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করা গেলে বাংলাদেশকে কোনোভাবেই দাবিয়ে রাখা সম্ভব নয়। এ দায়িত্ব ব্যাংকিংখাতের ওপর বর্তায় বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি উন্নয়নের সমতার জন্য গ্রাম পর্যায়ে উৎপাদনশীলখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির তাগিদ দেন।
‘৭৫ এর পনের আগস্ট হত্যাকাণ্ড কোনো পারিবারিক হত্যাকাণ্ড ছিলো না উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এটি ছিল বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিযাত্রাকে থামিয়ে দিতে পরাজিত শক্তির সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এর মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার অপচেষ্টা হয়েছিল। একইভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্র শেখ হাসিনাকে হত্যা করে বাংলাদেশকে নেতৃত্বশূন্য করতেই ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল। পনের আগস্টের হত্যাকাণ্ড এবং একুশ আগস্টের গ্রেনেড হামলা একই সূত্রে গাঁথা বলে তিনি মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ঋণের সমতার মাধ্যমে উন্নয়নের সমতা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রামের মানুষের টাকা এনে শহরে বিনিয়োগ করলে উন্নয়নের সমতা আসবে না। দেশে যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে ওঠছে, সেগুলো সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দক্ষ জনবল গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোকে শিল্পখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। তারা খেলাপী ঋণকে ব্যাংকিং সেক্টরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে ঋণদান প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেন। একই সাথে তারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার দ্রুত সমাপ্ত করে এর রায় বাস্তবায়নের দাবি জানান।
আপনার মতামত লিখুন :