শিরোনাম
◈ তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে সড়ক-রেলপথ অবরোধ শিক্ষার্থীদের (ভিডিও) ◈ নিঝুম মজুমদারকে হারপিক দেখানো নিয়ে যা জানালেন সাইয়েদ আব্দুল্লাহ(ভিডিও) ◈ আপনি বাংলাদেশে অবস্থান করলে এমনটা ভাবতে আপনাকে পাগলাটে হতে হবে : আল-জাজিরাকে প্রধান উপদেষ্টা ◈ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা, আসামের একটি হোটেলে অবস্থানের গুঞ্জন কাদেরের! ◈ নভেম্বরেই চালু হচ্ছে বহুল আলোচিত বেড়াডোমা ব্রীজ ◈ অস্ট্রেলিয়ান গিলেস্পি বাদ হয়ে যাচ্ছেন, পাকিস্তানের নতুন কোচ  আকিভ জাবেদ ◈ আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে নেশন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড ◈ নেশন্স লিগে ইতালিকে হারিয়ে গ্রুপসেরা ফ্রান্স ◈ প্রস্তুতি ম্যাচ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শুরুতেই চাপে বাংলাদেশ ◈ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যতদিন ছুটি থাকতে পারে ২০২৫ সালে

প্রকাশিত : ২০ আগস্ট, ২০১৯, ০২:১৭ রাত
আপডেট : ২০ আগস্ট, ২০১৯, ০২:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিশ্ব মশক দিবস আজ

নিউজ ডেস্ক: প্রতি বছর মশাবাহিত ভাইরাস থেকে জ্বরে কাবু হয় রাজধানী ঢাকার মানুষ। আর এবার যে ডেঙ্গু জ্বর ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে তা তো দিবালোকের মতো স্পষ্ট। সারা দেশের মানুষ আজ শঙ্কিত। ঠিক সেই সময়ই এল এবারের মশক দিবস। প্রতিবছরের ২০ আগস্ট দিনটি পালিত হয়। এমন অনেক দিবস আছে যার নামও হয়তো আমরা জানি না। তেমনই স্বল্প জানা একটি দিবস হচ্ছে বিশ্ব মশক দিবস। আজ বিশ্বের নানা প্রান্তে পালিত হচ্ছে বিশ্ব মশক দিবস।

মশক দিবসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে একজন চিকিৎসকের নাম। রোনাল্ড রস (১৮৫৭-১৯৩২) নামের এই ব্রিটিশ চিকিৎসককে সম্মান জানাতেই যুক্তরাজ্যের লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন দিবসটি পালনের সূচনা করেছিল। ১৯৩০ সালের দিকে শুরু হওয়া বিশ্ব মশক দিবস পালনের আনুষ্ঠানিকতা দিন দিন বাড়ছে।

২০ আগস্ট দিন মশক অথবা মশা দিবস পালন করা হয় রোনাল্ড রসের কীর্তির জন্য। তিনি যে ম্যালেরিয়া রোগের কারণ আবিষ্কারের জন্য অমর হয়ে আছেন, আর আবিষ্কারটি করেছিলেন ১৮৯৭ সালের এই ২০ আগস্ট। তিনি সে সময় প্রমাণ করেন, অ্যানোফিলিস প্রজাতির মশার পাকস্থলীর প্রাচীরের জলকোষে এক ধরনের দানাদার কালচে রঞ্জক পদার্থ রয়েছে। কয়েক মাস পর রস খাঁচায় বন্দী পাখির মাধ্যমে জীবাণুর জীবনচক্র বিশ্লেষণ করে দেখতে পান, রোগাক্রান্ত পাখির দেহ থেকে ম্যালেরিয়া সুস্থ পাখির দেহে সংক্রমিত হতে পারে। এই আবিষ্কারের জন্য পরবর্তী সময়ে তিনি চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

বিশ্বখ্যাত চিকিৎসক রোলান্ড রসের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশের আলমোড়া নামের একটি পার্বত্য এলাকায়। তাঁর বাবা স্যার ক্যাম্পবেল ক্লে গ্র্যান্ট রস ছিলেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল। মা মাতিলদা সারলোট ছিলেন লন্ডনের আইন ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড মেরিক এল্ডারটনের বড় মেয়ে। মাত্র আট বছর বয়সে রোনাল্ড রসকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য ইংল্যান্ডে পাঠানো হয়। রস প্রাণিবিদ্যায় আগ্রহী ছিলেন। এ ছাড়া ছন্দ, সংগীত ও কাব্য নিয়েও তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। তিনি শিল্পী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর বাবার ইচ্ছায় চিকিৎসক হিসেবে লন্ডনের সেন্ট বার্থলোম্যুর হাসপাতালে যোগ দেন। রস ১৮৮১ সালে এলএসএ (লিসেনসিয়েট অব দ্য সোসাইটি অব অ্যাপোথেক্যারি) ডিগ্রি অর্জন করে ইন্ডিয়ান মেডিকেল সার্ভিসে যোগ দেন। ভারতে কাজের সময়ই তিনি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কারটি করেন।

রসের আবিষ্কারের পরও মশাবাহিত নতুন নতুন ভাইরাসের নাম এসেছে। এই খুদে পতঙ্গ আজও বিশ্বের লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ। গবেষকেরা বলছেন, প্রতিবছর প্রায় ৮ লাখ ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় মশাবাহিত ভাইরাসে। মানুষের মৃত্যুর জন্য যে প্রাণীগুলো দায়ী, তার মধ্যে মশা অন্যতম। এমন পরিস্থিতি মশা দিবসটি হতে পারে জনসাধারণকে সচেতনতার দিন।

বিশ্ব মশক দিবসে মশা নিয়ে ১০টি তথ্য জেনে নিন-

১. মশা এক প্রকারের ছোট মাছি প্রজাতির পতঙ্গ। মশা নেমাটোসেরা মাছি বর্গের অন্তর্ভুক্ত। একটি মশার ওজন সাধারণত ২.৫ মিলিগ্রাম হয়ে থাকে।

২. একটি মশার জীবনচক্র চারটি পর্যায়ে বিভক্ত: ডিম, শূক, মুককীট, এবং পূর্ণাঙ্গ মশা।

৩. শুধুমাত্র স্ত্রী মশারাই স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, সরীসৃপ, উভচর প্রাণী এবং এমনকি কিছু মাছের রক্ত পান করে থাকে। পুরুষ মশারা কিন্তু মানুষ বা প্রাণীদের কামড়ায় না কিংবা রক্ত শোষণ করে না। একটি মশা একবারে ০.০০১ থেকে ০.০১ মিলিলিটার রক্ত পান করতে পারে। একবারে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের শরীরের সব রক্ত শোষণ করে ফেলতে মোট ১২ লক্ষ মশা প্রয়োজন।

৪. ডিম থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা হতে সময় লাগে পাঁচ দিনের মতো, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ মশা হতে সময় লাগে ৪০ দিন বা কিছু কিছু প্রজাতির ক্ষেত্রে আরও বেশি। একটা মশা প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস বেঁচে থাকতে পারে।

৫. স্ত্রী মশা জলের উপরে উপর নীচে উড়াউড়ি করে এবং পানিতে ডিম ছাড়ে। স্ত্রী মশা মশা বদ্ধ জলে বা জলাশয়ে ডিম পাড়ে। পূর্ণাঙ্গ একটি স্ত্রী মশা তার জীবনচক্রে ১০০-২০০টি ডিম দিতে পারে।

৬. মশার কোনো দাঁত নেই। মশা মুককীত তার পেটের সাহায্যে সাঁতার কাটতে পারে।

৭. মশার ডানাগুলো প্রতি সেকেণ্ডে প্রায় ৩০০ থেকে ৬০০ বার পর্যন্ত ঝাপটায়। মশারা সাধারণত, ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫০ মাইল পর্যন্ত গতিবেগে উড়তে পারে।

৮. পৃথিবীতে ৩,৫০০ এর বেশি প্রজাতির মশা রয়েছে।

৯. পৃথিবীতে সবথেকে ভয়ঙ্কর রোগের জীবানুগুলির বেশির ভাগ মশার মাধ্যমে ছড়ায়। মশা ভয়ঙ্কর রোগজীবাণু সংক্রামক। মশার মাধ্যমে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, ফাইলেরিয়া, পীত জ্বর, জিকা ভাইরাস প্রভৃতি রোগ হয়ে থাকে।

১০. প্রতিবছর প্রায় ৫১.৫ কোটি মানুষ মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হন এবং প্রায় দশ থেকে ত্রিশ লক্ষ মানুষ প্রাণ হারান যাদের মধ্যে বেশিরভাগই আফ্রিকার সাহারা অঞ্চলের শিশু।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়