মৌরী সিদ্দিকা : গোপালগঞ্জের জামাইবাজার একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। এ গ্রামেই পরম আনন্দে শিশুরা শিখছে বর্ণমালা ও নামতা। আর লেখার হাতে খড়ি হচ্ছে তালপাতায় নলখাগড়ার তৈরি কলমে। শুকনো তালপাতা, নলখাগড়ার কলম আর ভাতের হাড়ির কালি দিয়েই চলছে শিশুদের লেখাপড়া। প্রায় ৪০ বছর ধরে মন্দিরের সামনে এই পাঠশালাটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ডিবিসি, ১৬ : ০০
হাতে-মুখে কালি মেখে আনন্দপাঠ হয় এ বিদ্যালয়ে। হাতের লেখা সুন্দর করার আগ্রহ নিয়ে লেখাপড়া করায় স্বচ্ছল পরিবারের সন্তানদেরও এই পাঠশালায় পাঠায় অভিভাবকেরা। বর্ণমালা, নামতা ও বানানরীতিসহ প্রাক প্রাথমিকের নানা শিক্ষা দেয়া হয় তালপাতার পাঠশালায়। এখান থেকে হাতেখড়ি নিয়ে শিশুরা যায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তালপাতার পাঠশালায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫০। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পাঠদান চলে বেলা ১টা পর্যন্ত।
অভিভাবকরা জানান, শিশুরা তালপাতায় প্রথমে পড়াশোনা করে। তালপাতায় লিখলে ওদের হাতের লেখা আরও সুন্দর হয়। অনেক ছেলেমেয়ের অভিভাবকরা শিক্ষককে টাকা দিতে পারে না। তারপরও তারা শিক্ষাদান করেই যান।
পরম মমতায় পাঠদান করে চলেছেন তালপাতার পাঠশালার একমাত্র শিক্ষক কাকলী কৃত্তনীয়। তিনি বলেন, এখান থেকে পড়াশোনা করে শিশুরা যে ফলাফল করে তা অন্য জায়গার চেয়ে অনেক ভালো হয়।
তালপাতার পাঠশালার গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মানব রঞ্জন বাছার। তিনি জানান, এখানে যে কার্যক্রমটা দেখছি তা খুবই ভালো। মূলস্রোতে যাওয়ার আগে হাতেকলমে যে শিক্ষা তা নিজেরাই দেয়ার ব্যবস্থা করেছে।
পাঠশালাটির মান উন্নয়নের কথা জানান জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুকুমার মিত্র। তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বিদ্যালয়টির দিকে হাত বাড়িয়ে আমরা যেন প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন করতে সে বিষয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করবো আমাদের বিভাগ থেকে।
সম্পাদনা : রাকা চৌধুরী
'
'
আপনার মতামত লিখুন :