শিরোনাম
◈ পিনাকী ভট্টাচার্যের সঙ্গে প্যারিসে উপদেষ্টা আসিফ ◈ দেশবাসীর প্রতি মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারির আহ্বান ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতায় তিন মাস ◈ বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নানা মন্তব্য ◈ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না : তারেক রহমান ◈ ‘আসিফ নজরুলের সঙ্গে আ. লীগ নেতাকর্মীদের আচরণ দেশের আত্মমর্যাদার ওপর আঘাত’ : তারেক রহমানের বিবৃতি ◈ কী হয়েছিল জেনেভা বিমানবন্দরে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সঙ্গে? ভিডিও ◈ হিলি স্থলবন্দরে একদিনেই এলো ১৮০০ মেট্রিক টন আলু, কিছুটা কমেছে দাম ◈ এমবাপ্পেকে ছাড়াই নেশন্স লিগের জন্য দল ঘোষণা করলো ফ্রান্স ◈ তৃণমূল থেকে ক্রিকেটার বের করার লক্ষ্যে জিয়া টুর্নামেন্ট সোমবার শুরু

প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট, ২০১৯, ০৬:৩৭ সকাল
আপডেট : ১৩ আগস্ট, ২০১৯, ০৬:৩৭ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমার হুলিয়া, আমার বঙ্গবন্ধু

নির্মলেন্দু গুণ, ফেসবুক থেকে, প্রখ্যাত সাংবাদিক-সাহিত্যিক জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরী তাঁর জনপ্রিয় কলাম "তৃতীয় মত"-এ আমার "হুলিয়া" কবিতাটি নিয়ে একটি দীর্ঘ লেখা লিখেছিলেন। ( দৈনিক পূর্বদেশ, তৃতীয় মত, ২৪ জুলাই ১৯৭০)।

বঙ্গবন্ধু কবি হিসেবে আমাকে আগে থেকেই জানতেন। তাঁকে উৎসর্গ করে আমি একটি দীর্ঘ কবিতা লিখেছিলাম। কবিতাটি দৈনিক সংবাদ-এর সাহিত্য পাতায় ছাপা হয়েছিলো ১৯৬৭ সালের ১২ নভেম্বর।

সংবাদের সাহিত্য সম্পাদক রণেশ দাশগুপ্ত তখন কারাগারে ছিলেন বলে, ঔপন্যাসিক শহীদুল্লাহ কায়সার তখন ঐ পাতাটি সম্পাদনা করতেন।
তিনি পত্রিকা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই ঐ কবিতাটি সংবাদে ছেপেছিলেন। ওটাই ছিলো পূর্ব বাংলার উদীয়মান সূর্যকে নিয়ে রচিত প্রথম কবিতা। কবিতাটির নাম প্রচ্ছদের জন্য বা স্বদেশের মুখ শেফালি পাতায়।

উৎসর্গ শেখ মুজিবুর রহমানকে। তিনি তখনও বঙ্গবন্ধু হননি। ১৯৬৯ সালে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে রেসকোর্স ময়দানের আয়োজিত ছাত্রজনসভা করে সদ্য কারামুক্ত শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধি প্রদান করা হলে কবি জসীম উদদীন তাঁর বিখ্যাত "বঙ্গবন্ধু" কবিতাটি রচনা করেন।
সম্ভবত সেটিই ছিলো শেখ মুজিবকে নিয়ে লেখা দ্বিতীয় কবিতা।

দেশের গ্রামাঞ্চলের লোককবিদের মধ্যে তখন শেখ মুজিবকে নিয়ে কে কী লিখেছিলেন, তা আমার সঠিক জানা নেই।

আমার কবিতাটি তাঁর কাছে পৌঁছেছিল এবং তিনি কারাগারে বসে ঐ কবিতাটি পাঠ করে খুব খুশি হয়েছিলেন বলে তখনকার কারাবন্দী ছাত্রনেতা জনাব আবদুল লতিফ সিদ্দিকী এবং মার্কসবাদী সাহিত্যিক শ্রীরণেশদাশ গুপ্তর কাছে শুনেছি।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন ও গোল টেবিলের চাপে হয়তো আমার কথা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন। "হুলিয়া" নিয়ে লেখা জনাব আবদুল গাফফার চৌধুরীর কলামটি পড়ার পর আমার কথা তাঁর নতুন করে মনে পড়ে। তখন তিনি আমার সঙ্গে হুলিয়া কবিতা নিয়ে আলাপ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।"

আমি তখন দি পিপল পত্রিকায় সাব এডিটর পদে কর্মরত ছিলাম।

আমার মনে হয়, গাফফার চৌধুরীর 'তৃতীয় মত' পড়ার পর বঙ্গবন্ধু আমার কবিতায় তাঁকে নিয়ে উচ্চারিত সংশয় সম্পর্কে আমার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন। স্মরণীয়-- ঐ দীর্ঘ কবিতার একটি চরণ ছিলো--
"শেখ মুজিব কি ভুল করছেন?"

এই সংশয়যুক্ত প্রশ্নটির ওপরই জোর দিয়েছিলেন জনাব গাফফার চৌধুরী।

তিনি তাঁর লেখাটি শেষ করেছিলেন এভাবে--

"এ যেন বাংলার ক্ষুব্ধ তারুণ্যের স্বগতোক্তি। এই জবাবের চাইতে বড়সত্য
এই মুহূর্তে জনচেতনায় আর কিছু নেই।"

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের সন্ধ্যায় আমি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে তাঁর বত্রিশ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে যাই। কিন্তু তখন বড় বেশি দেরী হয়ে গিয়েছিলো।
তিনি সেদিন কারও সঙ্গেই দেখা করেননি। প্রেসকেও মিট করেননি। আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে তিনি দীর্ঘসময় ধরে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। আসন্ন যুদ্ধের মুখে দাঁড়িয়ে নেতাদের পালনীয় সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা তখন চলমান জনস্রোতের দিকে তাকিয়ে ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে হাত নাড়ি। ভিড়ের মধ্যেও তিনি আমাকে চিনতে পারেন এবং আমাকে বাড়ির ভিতরে যাবার জন্য ডাকেন -- কিন্তু আমন্ত্রণটিকে নিতান্ত সৌজন্যমূলক মনে করেই আমি আর বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করিনি।

শেখ হাসিনাকে তখন আমি বঙ্গবন্ধুর আদুরে-কন্যা হিসেবেই জানতাম। রাজনীতিবিদ হিসেবে নয়। বাকিটা ইতিহাস।

(শেখ হাসিনাকে নিবেদিত)

নয়াগাঁও, ১৩ আগস্ট ২০১৯

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়