শিরোনাম
◈ টাকা ধার নিয়ে অনেকেই গড়িমসি করেন, ফেরত না দিলে যা করবেন ◈ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিৎ: নাহিদ ইসলাম ◈ শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’ : হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ হেফাজতে ইসলামের ◈ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ◈ আন্দোলনকারীরা আমারই ভাই, কার ওপর কঠোর হব : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ◈ চিন্ময় কৃষ্ণকে গ্রেপ্তারের কারণ জানালেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ◈ এবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি ◈ চট্টগ্রামে ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ◈ সংবিধানে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য, উপ-প্রধানমন্ত্রী পদ রাখাসহ আরও যেসব প্রস্তাব বিএনপির ◈ অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল জ্যাকবকে রিমান্ড শেষে কারাগারে

প্রকাশিত : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ০৬:৩১ সকাল
আপডেট : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ০৬:৩১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘দরজা খোল, রিফাত আসছে’

ফাতেমা আহমেদ : ‘বাবায় আমারে নিজের হাতে খাওয়াইতো, আমি অসুস্থ হইলে আমার পাশে বইস্যা কত্ত সেবা যত্ন করতো। আমার আব্বু কোরবানিতে রুটি খাইতো, কলিজা ভুনা খাইতো। আহারে আমার বাবা, আমার বাবারে হারাইয়া আমি অসহায় অইয়া পড়ছি।’ বিলাপ করতে করতে এভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন নিহত রিফাতের মা ডেইজী বেগম। রাইজিংবিডি

আগত ঈদের আনন্দের মধ্যেও রিফাতের শোকে নিভৃতে কাঁদছে গোটা বাড়ি। ছেলের মৃত্যুর পর সেই যে বিছানায় শুয়েছেন মা ডেইজী, আর উঠতেই পারছেন না। দেড়মাসের বেশি সময় কেটেছে, কিন্তু ছেলে হারানোর শোক কিছুতেই কাটাতেই পারছেন না তিনি।

ঈদুল আজহায় রিফাতের বিশেষ পছন্দ ছিলো রুটি আর কলিজা ভুনা। রান্না করে নিজের হাতে খাওয়াতেন ছেলেকে। ছেলেও নিজ হাতে খাইয়ে দিতো মাকে। মায়ের কাছে সেসব এখন কেবলই স্মৃতি।

ডেইজী বেগম বলেন, ‘আমি অপেক্ষায় থাকি, রিফাতের মোটরসাইকেলের শব্দ এই বুঝি কানে ভেসে এলো, মনের অজান্তেই বলে ফেলি, ‘মৌ (নিহত রিফাতের ছোট বোন), মা; দরজা খোল, রিফাত আসছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেরে যারা কুপিয়ে মেরেছে, তাদের কেউ যেন রেহাই না পায়, প্রত্যেককে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার দেখে মরতে চাই’, বলতে বলতে ফের কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

মৌ বলেন, ‘কোরবানির দিন সকালে উঠেই ভাইয়া বলতো, মৌ নুডুলস রান্না কর। নুডুলস খেয়ে নামাজ পড়া শেষে বাবা-কাকাদের সাথে গরুর মাংস নিয়ে ফিরে বলতো, মৌ কাবাব বানা, তোর হাতের রান্না করা নুডলস আর কাবাব আমার খুব পছন্দ’।

‘আমি জানতাম আমার ভাইয়া আমার হাতের নুডলস আর কাবাব পছন্দ করতো। খুব যত্নে বানিয়ে যখন ওর সামনে দিতাম, সে মা ও আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিতো। ভাইয়া মারা যাওয়ার পর আমি নুডুলস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি। ভাইয়ার পছন্দের খাবার আমার সামনে এলে আমি খেতে পারি না’, কথাগুলো বলতে বলতে কান্না ভেঙে পড়েন মৌ।

তিনি বলেন, ‘আমার মা অসুস্থ, তবুও প্রতিদিন ভাইয়ার কবরের পাশে গিয়ে ৩/৪ ঘন্টা কান্নাকাটি করেন। বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় কখনো ডুকরে আবার কখনো হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তকে কী সান্ত¡না দেবো, কে সান্ত¡না দেবে বলুন। আমার ভাইকে যারা মেরেছে, আমি দ্রুত তাদের গলায় ফাঁসির দড়ি দেখতে চাই’।

রিফাতের বাবা দুলাল শরীফকে একদিকে ছেলে হারানোর শোক বইতে হচ্ছে, অপরদিকে মৃত্যুতে শোকে বিহ্বল গোটা পরিবারকেও দেখতে হয় তার। তাই চাইলেও কাঁদতে পারেন না তিনি। তবু চোখের জল কার কথা শোনে!

রিফাতের প্রসঙ্গে জানতে চাইতেই তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘ঈদে আমার পা ছুঁয়ে সালাম করতো রিফাত। আমি ওরে সেলামি দিতাম। ওর শখ ছিলো পাঞ্জাবি ও এক জোড়া জুতার। এর বেশি কিছু কখনোই চাইতো না। বাবা-ছেলে মিলে একসাথে ঈদের নামাজে যেতাম, ফিরে একসাথে সবাই খেতে বসতাম। ও নেই, আমার তো আসলে অবশিষ্ট কিছুই নেই’।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়