শিরোনাম

প্রকাশিত : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ০৩:১৩ রাত
আপডেট : ১১ আগস্ট, ২০১৯, ০৩:১৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রায় স্বল্প আয়ের মানুষ

ফাতেমা আহমেদ : যাত্রীবাহী পরিবহনে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া নেয়ায় আপনজনের সঙ্গে কোরবানির ঈদ পালন করতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বাড়ি ফিরছেন স্বল্প আয়ের মানুষরা। বাংলানিউজ

শনিবার (১০ আগস্ট) সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কে দেখা যায়, বাসের ছাদ ও ট্রাকের ঢালায় বসে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় যাতায়াত করছে নিম্ন আয়ের অসংখ্য মানুষ।

গার্মেন্টসকর্মী আব্দুল্লাহ, ইয়াছিন, সাব্বির, নাদিমসহ ৩০ জন গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে মিনি ট্রাকে করে রংপুরের পীরগঞ্জে যাচ্ছেন। তারা মিনি ট্রাকটি ভাড়া করেছেন ১২ হাজার টাকায়। ভাড়া পড়েছে জনপ্রতি ৪শ’ টাকা। মিনি ট্রাকটিতে সবার জায়গা না হওয়ায় অনেককেই ট্রাকের ঢালার উপর বসে যেতে দেখা যায়।

প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও মালবাহী কন্টেইনারে চেপে গার্মেন্টসকর্মী নাসিমা খাতুন, শেফালি বেগম, মোখলেসুর রহমান এবং রুবেলসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন যাত্রী গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যাচ্ছেন। মালবাহী কন্টেইনারে তাদের ভাড়া লেগেছে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। এছাড়াও হাজার হাজার নির্মাণ শ্রমিক, মাটিকাটা শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর ঈদযাত্রার অন্যতম বাহন খোলা ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান অথবা বাসের ছাদ। ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে স্বল্প আয়ের মানুষ। নলকা ও পাঁচলিয়া বাজার এলাকায় সরেজমিনে কথা হয় এসব নিম্ন আয়ের মানুষের সঙ্গে।

গার্মেন্টসকর্মী শেফালি বলেন, ‘গার্মেন্টসে কাজ করে যে বেতন পাই, তা দিয়ে বাড়ি ভাড়া ও সংসার খরচ চালানো যায় কোনো মতে। ঈদে বাড়ি ফিরতে বাড়তি খরচ করার মতো টাকা আমাদের কখনোই হয় না।’

নির্মাণ শ্রমিক সোবহান আলী বলেন, ‘১৫ দিন ধরে ঢাকায় কাজ করছি। মজুরি পেয়েছি সাড়ে ৬ হাজার টাকা। ওই টাকায় থাকা-খাওয়ার পর পরিবারের ঈদ খরচের জন্যও কিছু নিতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া দেবো কোথা থেকে। তাই প্রচণ্ড রোদ মাথায় নিয়ে যানজটের ভোগান্তির মধ্যেও ট্রাকেই বাড়ি ফিরছি। ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফিরছে স্বল্প আয়ের মানুষ। সোবাহানের মতো মাটিকাটা শ্রমিক ইকবাল, কোরবান আলী, গার্মেন্টসকর্মী, সিরাজ আলী, সুজন শেখসহ হাজারও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম যানবাহন এ খোলা ট্রাক আর কাভার্ড ভ্যান।

হতদরিদ্র এসব শ্রমিকদের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ঢাকা থেকে যেকোনো বাসে উঠলেই দিগুণ থেকে তিনগুণ ভাড়া নেয়া হচ্ছে। চন্দ্রা থেকে বগুড়া পর্যন্ত আসনবিহীন যেতে চাইলেও ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা ভাড়া গুণতে হচ্ছে। আর ভালো বাসে যেতে হলে ভাড়া আরও বেশি। টাকা বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় চলতে হচ্ছে তাদের।

তারা আরও বলেন, দুর্ভোগ আর ভোগান্তি আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। আপনজনকে নিয়ে একসঙ্গে ঈদ করতে রোদ বৃষ্টি যাই আসুক, যানজটের কারণে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা যতই সময় লাগুক, আমাদের এভাবে বাসের ছাদে বা ট্রাকে করেই বাড়ি ফিরতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়