মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান : সুষমা স্বরাজ চলে গেলেন না ফেরার দেশে। ভদ্রমহিলার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিলো দিল্লিতে সার্কের স্পিকার ও সংসদ সদস্যদের সম্মেলনে। সাতদিন ছিলাম। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত এক সঙ্গেই বিভিন্ন আলোচনায় অংশ নিতাম। খুবই অমায়িক ও চৌকস একজন নারী। যাদের অবদানে আজকে বিজেপি ভারতের ক্ষমতায় আসীন তার পেছনে সুষমাজির অবদান বিশাল।
সম্মেলনে গিয়েছিলাম ১৯৯৪ সনে সুষমা স্বরাজ তখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। সুষমাজির সঙ্গে আমার পরিচয়টা ছিলো দারুণ। আমি ওই সম্মেলনে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে প্রায় একঘণ্টা বক্তৃতা রাখি। সেই বক্তৃতার পরে মঞ্চে থাকায় অবস্থায়ই আমাকে অনেক ভারতীয়, পাকিস্তানি, নেপালী, শ্রীলঙ্কান নেতৃবৃন্দসহ অনেক নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। যার মধ্যে অন্যতম ছিলেন ভারতীয় সংসদের তখনকার বিরোধীদলের নেতা শ্রদ্ধেয় অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ। ওই বক্তৃতায় একপর্যায়ে ফারাক্কার ন্যায্য হিস্যা না দেয়ার জন্য আমি জোর প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম এবং ফারাক্কার পানি না দেয়ার প্রতিবাদে রাষ্ট্রীয় ভোজসভা বয়কট করেছিলাম। আমার এই পদক্ষেপ সুষমাজি সমর্থন করেছিলেন এবং এমন একটি আন্তর্জাতিক ফোরামে দেশের সমস্যাটি জোরালোভাবে তুলে ধরার জন্য তিনি আমাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান। আমার দাবিতে তার সমর্থন আছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করলে তিনি মুচকি হেসে বলেন, ‘আমি সমর্থন করলাম কিনা সেটি বড় কথা নয়, তুমি তোমার জাতীয় সমস্যাটি জোরালোভাবে তুলে ধরেছো যা আমি সমর্থন করি। তুমি তোমার দাবি নিয়ে জোরালো চাপ সৃষ্টি করতে পারলেই তুমি তোমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে’। আজ মনে পড়ছে সেই কথাগুলো। সুষমাজি চলে গেলেন। কিন্তু কথাগুলো আমার মনে থাকবে। আমি আজকে অনেক দুঃখ ও বেদনা নিয়ে সুষমাজির বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য
আপনার মতামত লিখুন :