শাহীন খন্দকার : নেত্রকোণা জেলার সূসং দুর্গাপুর উপজেলা সদরে বয়ে যাওয়া সোমেশ্বরী নদীর সেতুর কাছ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে ঝুঁকির মধ্যে দূর্গাপুর শহরসহ, হাটবাজার, গ্রামসহ বেশকয়েকটি ইউনিয়ণ ও রয়েছে রয়েছে নদীর ওপর নির্মিত সেতু। সোমেশ্বরীর নদীর বেড়িবাধসহ সেতু মুখ থেকে বালু উত্তোলন চলছে। এতে ঝুঁকিতে রয়েছে সেতু ও বেড়িবাঁধ । বেড়িবাঁধ ভেঙে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ী বৃষ্টির ঢল যদি ঢুকে পড়ে সর্বনাশ ঘটে যাবে চলে যাবে দূর্গাপুর শহরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন সোমেশ্বরীর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে এলাকাবাসী মনে করছে !
এদিকে দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদীর সেতুর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করায় সোমেশ^রীর নদীর উপর নির্মিত বিরিশিরি দূর্গাপুর ও আত্রাখালীর ব্রীজ ২১০ মিটারের মতো সেতুর জায়গা ঝুঁকিতে পড়ে গেছে। এ ছাড়া সেতুর উত্তর পাশে বসতবাড়ির কাছ থেকে বালু তোলায় ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে সহস্রাধিক বসতবাড়ি ও স্থাপনা।
অভিযোগ, সরকারিভাবে বালুঘাট ইজারা নেওয়া প্রভাবশালী ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক প্রভাব যুক্ত থাকায় বালু উত্তোলনে বাধা দিলেও কাজ হচ্ছে না।প্রশাসনও নীরব ভূমিকা পালন করছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ৪-এর খ ধারায় উল্লেখ আছে সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, ব্যারাজ, বাঁধ, সড়ক, মহাসড়ক, বন, রেললাইন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনার ১ কিলোমিটারের মধ্য থেকে বালু তোলা যাবে না। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর সোমেশ্বরী নদীর পাঁচটি বালুমহাল ১৩ কোটি টাকার ওপরে ইজারা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ১ নম্বর ঘাট বিজয়পুর-ভবানীপুর ৫ কোটি ২০ লাখ টাকার অনুমোদন পান অঞ্জন সরকার নামের একজন ঠিকাদার। ২ নম্বর ঘাট পৌর শহরের তেরিবাজার থেকে শিবগঞ্জ ৪ কোটি ৬ লাখ টাকার অনুমোদন পান আলাল সর্দার। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা-কর্মীও রয়েছেন। ইজারাদাররা প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো রকম নিয়ম-নীতি না মেনে নিয়মবহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করেছেন। তাঁরা স্থানীয়দের সুবিধা-অসুবিধা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
গত কাল বুধবার সংশ্লিষ্ট সুএ জানায় সোমেশ্বরী নদীর ওপর সেতুটির প্রায় ১২০ গজ দূর থেকে খনন যন্ত্রের সাহায্যে বড় বড় চারটি নৌকায় বালু তোলা হচ্ছে।
এ ছাড়া সেতুর উত্তর পাশে প্রায় ৩০০ গজ এবং বসতবাড়ি থেকে মাত্র ৪০ গজ দূরে চর মোক্তারপাড়া এলাকায় অন্তত ১৫টি খননযন্ত্র বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে এলাকার সহস্রাধিক বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়ছে।
চর মোক্তারপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি রায়হান মিয়া বলেন, চার দিন ধরে সেতুটির কাছে ও তাদের বাড়ির পেছনে নদীর তীর থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে শত শত লোক বাধা দিলেও কাজ হচ্ছে না। মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, থানা-পুলিশ সবাইকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
এদিকে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বললেন, ‘বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অবৈধ এবং আইন বর্হিভ’ত ভাবে বালু উত্তোলন করে থাকলে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :