স্বপ্না চক্রবর্তী : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে আজীবন জ্বালানি (ইউরেনিয়াম) সরবরাহের ঠিকাদার হিসেবে নিযুক্ত হলো পরমাণু সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার টিভিইএল জয়েন্ট স্টক কোম্পানি। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সঙ্গে কোম্পানিটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব আনোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক, কেন্দ্রটির প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর, টিভিইএলের বাণিজ্যিক পরিচালক ফেদর শকোলভ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজেন্ডার আই ইগটভ।
স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘ফুকুসিমার মতো দুর্ঘটনা ঘটলেও আমাদের কোনো ভয় নেই। আপনারা দেখেছেন, কোর ক্যাচার নামে যুক্ত করা হয়েছে। ফুকুসিমায় গ্যাস বের হতো, এখানে গ্যাস বের হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। কিছু ফর্মুলা রয়েছে, এর বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সারা বিশ্ব যেভাবে চুক্তি করে আমরাও সেভাবে চুক্তি করেছি।’
আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এটি শুধু বিদ্যুৎ নয়, প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও মাইলস্টোন। আমরা উন্নত প্রযুক্তিতে প্রবেশ করছি। এখন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার সময়। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে এই অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১১ সালের ২ নভেম্বর বাংলাদেশ সরকার ও রশিয়ান ফেডারেশনের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিষয়ে আন্তঃসরকার চুক্তি হয়। ওই চুক্তি অনুসারে রাশিয়ার কাছ থেকে বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য জ্বালানি আনার কথা উল্লেখ ছিল। এটি একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি। চুক্তির শর্তমতে, প্রয়োজনে বিশ্ব বাজারের দর অনুসারে জ্বালানি সরবরাহ করবে রাশিয়া। এই দর নির্দিষ্ট সময় পরপর পর্যালোচনার মাধ্যমে ঠিক হবে।
দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে চারটি ধাপ বিবেচনা করা হবে। এগুলো হচ্ছে ইউরেনিয়ামের দাম, কনভারশন সার্ভিস (প্রক্রিয়াকরণ খরচ), এনরিচমেন্ট সার্ভিস ও ফুয়েল ফেব্রিকেশন। এই চার ধাপের কাজ আলাদা আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হবে। এই কাজ সমন্বয় করে মোট মূল্য নির্ধারণ করা হবে। প্রতি ১০ বছর পরপর এই দামের মূল্যায়ন করা হবে। কেন্দ্রটি বাংলাদেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, যার নির্মাণকাজও করছে রাশিয়া। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২০২২ সালে উৎপাদনে আসবে। এর মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট।
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়