খালিদ আহমেদ : তথাকথিত অবৈধ অভিবাসী ইস্যু বাংলা-ভারত সম্পর্কে কি প্রভাব ফেলতে যাচ্ছে? আগামী ৭ই আগস্ট বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ‘অবৈধ অভিবাসী’ প্রশ্ন বড় করে তুলে ধরবেন, সেই ইঙ্গিত পিটিআই আগেভাগেই দিয়েছে। ভারতের শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকাগুলো সেই খবর বেশ গুরুত্বের সঙ্গে ছেপেছে। মানজমিন
সোমবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্টোবরে ভারত সফর করবেন। আগের দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকর এক টুইট বার্তায় বাংলাদেশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার সৌজন্য সাক্ষাতে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। মি. জয়শংকর বলেছেন, তিনি বাংলাদেশে যেতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষমাণ।
উল্লেখ্য যে, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩১শে জুলাইয়ের মধ্যে আসামে চূড়ান্ত নাগরিকত্ব তালিকা প্রকাশের কথা ছিল। কিন্তু আসাম সরকার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করা খসড়া তালিকার ২০ ভাগ পুনঃযাচাইসহ অন্যান্য কারণ দেখিয়ে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিল।
সুপ্রিম কোর্ট পুনঃযাচাইয়ের বিষয়টি নাকচ করলেও ৩১শে আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা বাড়িয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ৩১শে আগস্টের পরে প্রায় ৪০ লাখ ‘বাংলাদেশি’ বিবেচনায় বাদ পড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। আর তখন থেকে তা যে একটি বিশেষ ইস্যুতে পরিণত হতে পারে, সেটি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের পর্যবেক্ষকদের ভাবিয়ে তুলছে।
এই প্রেক্ষাপটে গত বৃহস্পতিবার আসামের বিধানসভায় প্রকাশিত একটি তালিকার দিকে দৃষ্টি রাখছেন অনেকেই। সেখানে বলা হয়েছে যে আসাম সরকার বিস্মিত। কারণ সরকার দেখছে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিদেশি বলে বাদ পড়াদের শতকরা হার অন্যান্য জেলাগুলোর চেয়ে অনেক কম। অথচ আশা করা হয়েছিল যে, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলা বলেই সেখানে নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়াদের সংখ্যা সব থেকে বেশি হবে।
আসাম বিধান সভায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নাগরিকত্বের তালিকায় নামভুক্তির দরখাস্ত পড়েছিল ৩ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার ৩৮৫। এরমধ্যে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭১৭ জনের নাম বাদ পড়েছে। তাদের দরখাস্ত নাকচ হয়েছে। এটা শতকরা হিসাবে সোয়া ১২ শতাংশ।
আসামে বিজেপি সাংসদরা বলছেন, বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে নাম বাদ পড়াদের শতকরা হার কি করে এতটা কম হতে পারলো? এটা তো অনেক বেশি হওয়ারই কথা। উদাহারণ হিসাবে তারা বলেছেন, আসামের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ হোজাই জেলায় ৩২ দশমিক ৯৯ শতাংশ, দারাং জেলায় বাদ পড়েছে প্রায় ৩১ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী দক্ষিণ শালমারায় মাত্র ৭ দশমিক ২২ শতাংশ, ধুবড়িতে মাত্র ৮ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং করিমগঞ্জে মাত্র ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ নাগরিকের দরখাস্ত অগ্রাহ্য হয়েছে।
কেন বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারীরা এতটা কম বাদ পড়লো- সেটা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন, আসাম চুক্তি বাস্তবায়ন এবং সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী চন্দ্র মোহন পাটোয়ারি।
ধারণা করা যায়, প্রায় ৪০ লাখ কথিত বাংলাদেশির প্রত্যাবাসন নিয়ে ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী।
আপনার মতামত লিখুন :