শাহীন খন্দকার: নান্দনিকতা নির্মাণশৈলী আর সৌন্দর্যে অনন্য রাজধানীর হাতিরঝিল হাতছানি দিয়ে ডাকে নগরবাসীকে। যান্ত্রিক নগরজীবনে একচিলতে সবুজের হাতছানি দিয়ে ব্যস্ততার ফাঁকে খোলা আকাশের নিচে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে হাতিরঝিলে ঘুরতে আসেন পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকেই। গোধূলি বেলায় এ সৌন্দর্য আরো উদ্ভাসিত হয়ে উঠে রাতের মিটিমিটি আলোর লুকোচুরিতে অপরূপ বেশে ধরা দেয়। এই সৌন্দর্যকে উপভোগের জন্য হাতিরঝিল কর্তৃপক্ষ সংযোগ করেছেন ওয়াটার-টেক্সি। রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নিকট থেকে করিম গ্রুপ লিজ নিয়ে ওয়াটার টেক্সি পরিচালনা করছে।
ওয়াটার টেক্সি চালুর ফলে বাড্ডা, গুলশান, রামপুরা, খিলগাঁওসহ নগরীর পূর্বাংশের মানুষ কাওরান বাজার, মগবাজার, দিলু রোড, ইস্কাটন, বাংলামোটর, তেজগাঁওয়ের যাতায়াত ব্যবস্থা আরো সহজ হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এ সার্ভিস বারিধারা লেক পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
একপাশে সবুজ বনায়ন অন্যদিকে হাতিরঝিলের টলটলে পানিতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারিপাশ।
হাতিরঝিলের গড়ে ওঠা লেকের বুকে ছুটে যাচ্ছে যাত্রীবাহী ওয়াটার ট্যাক্সি। এটি যেমন দিচ্ছে মনোরম এক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, তেমনি যানজটহীন গুলশান থেকে কাওরান বাজারের দূরত্ব অতিক্রম করা যাচ্ছে সহজে। এখন পাঁচটি স্পট থেকে ২০টি ওয়াটারট্যাক্সি চলছে। এক একটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা ৪৫ জন। নিয়মিত যাত্রীদের পাশাপাশি প্রতিদিন বেড়াতে আসেন ট্যুরিস্ট।
হাতিরঝিল লেকে ওয়াটারট্যাক্সি সার্ভিস সকাল ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে। এফডিসি টার্মিনাল থেকে গুলশান টার্মিনালে যেতে সময় লাগে মাত্র ২০ মিনিট। এর চেয়েও ৫ মিনিট কমে ট্যাক্সি পৌঁছে যায় রামপুরা টার্মিনালে। এফডিসি থেকে রামপুরা টার্মিনাল পর্যন্ত ১৫ টাকা ও গুলশান টার্মিনাল পর্যন্ত ৩০ টাকা টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ট্যাক্সির ভেতরে একটি মিনি ক্যান্টিন রয়েছে। যাত্রীরা ওখান থেকে বিস্কুট, কেক, কোমল পানীয় ও হালকা খাবার কিনে খেতে পারেন।
তবে সার্বিক দেখভাল করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, জানান পুলিশ প্লাজা ঘাটের কাউন্টার মাস্টার সুমি।
দৈনিক আমাদের নতুন সময় পত্রিকাকে সুমি জানান, প্রতিদিন সকালে পাঁচটি ঘাট থেকে নিয়মিত ওয়াটার টেক্সি ছাড়া হয়। নগরজীবনে অফিস আদালতে যাতায়াতেও ভূমিকা রাখছে। হাতিরঝিল ওয়াটার-টেক্সির সংখ্যা বর্তমানে ২০টি রয়েছে, ঘাট ৫টি। ঘাটগুলো হচ্ছে গুলশান, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, এফডিসি, মেরুন বাড্ডাসহ পুলিশ প্লাজা। রয়েছে ১৩ জন কাউন্টার মাস্টার, চেকার ২৭ জন, ইনচার্জের দায়িত্বে ৭ জন, সারেং প্রায় ৩০জন। ঈদ উৎসবে প্রতি ৩০ মিনিট ভ্রমণে নেয়া হয় দুইশত টাকা আর ৩০ টাকার ভাড়া ৭০ টাকা নেয়া হয়। গড়ে আয় হচ্ছে লক্ষাধিক।
সম্পাদনা : মিঠুন, মুনশি
আপনার মতামত লিখুন :