রবিউল আলম : যানজট নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। যানজটমুক্ত করা যাবে আমি তা বলবো না, তবে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু রাস্তায় রিকশা বন্ধ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আর যায় কোথায়, ভাঙ গাড়ি। গাড়ি ভাঙার জন্য হরতাল করা হচ্ছে। কোনো কিছুর মূল্য বৃদ্ধি করা যাবে না, রিকশা বন্ধ করা যাবে না, সরকারের উন্নয়মূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা যাবে না, এ কোন ধরনের দাবি?
সব বিষয়েই যদি আমরা রাজনীতি করি, বাধা সৃষ্টি করি তবে দেশের উন্নয়ন হবে কি করে? বাজেট দিলে হয় গরিব মারার বাজেট, কর নির্ধারণ করা হলে বলা হয় গরিব মরবে, আরে গরিব মানুষ কর দিলো কবে? তবুও আমাদের দেশে গরিব নিয়ে রাজনীতি চলছে। গরিবকে নিয়ে স্লোগান দিতে ভালো লাগে। গরিব মানুষকে দেখতে ভালো লাগে না, কিন্তু গরিব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মিছিল করতে ভালো লাগে। যুগে যুগে গরিবের শ্রম নিয়ে এ সমাজ বড় হয়েছে, কিন্তু গরিবের ভাগ্যের কি উন্নয়ন হলো সেই হিসাবটা বাকিই থেকে গেলো। একটি শিশুর গল্প মনে হলো... একজন বাবা তার ছেলেকে একটি কলার খোসা ছিলে দিলো। ছেলে বলে উঠলো, কলা ছিলে দিলে কেন, আমি খাবো না। এবার ছেলেকে আরও একটি কলা দেয়া হলো। ছেলে বলে উঠলো, ছিলে না দিলে খাবো কি করে? গ্যাস নেই, খাওয়া হবে না, আমদানি করে গ্যাস আনা হলো, খাওয়া হচ্ছে। টাকা দেবো কি করে? যানজট থেকে নগরীকে মুক্ত করতে হবে। ওভারব্রিজ, মেট্রোরেল, আধুনিক গাড়ি, চক্রাকার এসি গাড়ির সেবা প্রদান করতে হবে। এবার রিকশা বন্ধ করা যাবে না, এও কি রাজনীতির জন্য রাজনীতি বলা হবে না। এই রাজনীতি দেশের কোনো গরিব মানুষের উপকার করবে? সমাজতান্ত্রিক রাজনীতির জন্য গরিব মানুষের জন্য অনেক নিবেদিত রাজনৈতিক নেতা জীবন উৎসর্গ করেছে।
ত্যাগী বাম রাজনৈতিক নেতাদের সম্মান আমার কাছে আকাশের মতো। জনতার জন্য, দেশের জন্য প্রতিবাদের ভাষা এখনো কিছু বাম রাজনীতিতে আছে এবং বাম রাজনীতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আমার ভালো লাগে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, খালেকুজ্জামানের মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে। কিন্তু তারাও অনেক সময় বিএনপি-জামায়াতের ভাষায় রাজনৈতিক স্বার্থে কথা বলছেন, যুক্তি ছাড়া সব কিছুতেই বিরোধিতা করছেন, আম আর ছালাকে মিলিয়ে নিচ্ছেন। গ্যাসের দাম না বাড়িয়ে আমদানি হবে কীভাবে? বিশ্বের কোন দেশে মহাসড়কে রিকশা চলছে? উবার, পাঠাও, সহজসহ অনেক আধুনিক ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, আসছে মেট্রোরেল। তারপরও রিকশা নিয়ে এতো মাথা ব্যথার কারণকে আমি রাজনৈতিক ফায়দা লোটা ছাড়া আর কি বলবো? গাবতলী থেকে আজিমপুর, সায়দাবাদ থেকে মহাখালীতে এখন কি আর রিকশা চালানো যায়? প্রশ্ন হাজারো, উত্তর দেবে কে? লেখক : মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি
আপনার মতামত লিখুন :