শিরোনাম
◈ এবার বিদেশে বসে শেখ হাসিনার সাথে আওয়ামী নেতাদের টেলিকনফারেন্স! (ভিডিও) ◈ কূটনৈতিক জোন থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গাড়ি লাপাত্তা ◈ সাম্প্রদায়িক উদ্দেশে চিন্ময় কৃষ্ণ সন্ত্রাসী সমর্থকগোষ্ঠী তৈরি করেছে: উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ◈ ইমরান খান মুক্তি না পেলে ডি-চক ছাড়বেন না বুশরা বিবি, ‘ডি-চক’ আসলে কী? ◈ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের ইস্যু, ভারতে বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ◈ রাষ্ট্রদূত হলেন সদ্য সাবেক আইজিপি ময়নুল ◈ চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ বাংলাদেশে আলু-পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলো ভারত সরকার ◈ ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলাদেশ, এবার হেরে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ◈ বাংলাদেশ- আয়ারল্যান্ডের প্রথম ওয়ানডে বুধবার, আধুনিকতার ছোঁয়ায় উন্মোচিত হলো ট্রফি

প্রকাশিত : ০৪ আগস্ট, ২০১৯, ১২:১২ দুপুর
আপডেট : ০৪ আগস্ট, ২০১৯, ১২:১২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গরুকে সেবন করানো অ্যান্টিবায়োটিকই দুধের সাথে মিশে

আহমেদ শাহেদ : সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় কৃষকদের খামারে প্রতিদিন প্রায় তিন লাখ লিটার তরল দুধ উৎপাদন হয়। এককভাবে এই এলাকাটিতে দেশের সবচেয়ে বেশি দুধ উৎপাদন হয়। এসব দুধ মিল্টভিটাসহ বিভিন্ন কোম্পানি সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াজাত করে ভোক্তাদের জন্য বাজারে নিয়ে আসে। বিবিসি বাংলা

শাহজাদপুর এবং বাঘাবাড়ির বিভিন্ন গরুর খামার ঘুরে দেখা গেছে, অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কৃষকদের কাছে বেশ পরিচিত একটি বিষয়। অনেক খামারি আছেন যারা অনায়াসে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিকের নাম বলতে পারেন।

শাহজাদপুরের একটি গরু খামারের মালিক আবু সিদ্দিক জানান, গরু অসুস্থ হলে তারা অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগ করেন।

তিনি বলেন, 'আমরা তখনই অ্যান্টিবায়োটিক দেই যখন দেখি গরুটার মরণাপন্ন অবস্থা। একটা গরুর দাম দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। সেইটা যদি মারা যায়, তাহলে তো খামারি শেষ হয়া যাবে।'

শাহজাদপুরের গবাদি পশুর চিকিৎসক এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো গরু রোগাক্রান্ত হলে তাকে যদি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেয়া হয়, তাহলে সে গরুর দুধ দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারে বিক্রি করা উচিত নয়।

কিন্তু বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যে গরুটি প্রতিদিন ২০ লিটার দুধ দেয়, সে গরুর দুধ বিক্রি যদি দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকে তাহলে একজন খামারি ১৫ দিনে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা ক্ষতির মুখে পড়বেন। একজন দরিদ্র খামারির এ লোকসান মেনে নেয়া রীতিমতো অসম্ভব।

শাহজাদপুরের একটি গ্রামে প্রাণ কোম্পানির জন্য খামারিদের কাছ থেকে দুধ সংগ্রহ করেন রাকিবুল মাহমুদ। তিনি বলেন, আমি যখন দুধ এখানে রিসিভ করি তখন অনেক সময় দেখা যায় দুধে মাই আসছে। মাই এক ধরনের রোগ। এটা গরুর ওলান দিয়ে বের হয়। কৃমির ট্যাবলেট দিলে দুধে মাই আসে। তখন আমি খামারিদের বলে দিই যে মাই আসা দুধ আমি রিসিভ করব না।

তিনি বলেন, তাৎক্ষনিক ওরা অ্যান্টিবায়োটিক ডোজ দিয়ে দেয়। স্বাভাবিকভাবে মাই সারতে ১০-১৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিক দিলে দেখা যায় ওটা পরের দিন থেকে ক্লিয়ার হয়ে যায়। ওই অ্যান্টিবায়োটিকটা যাবে কই? অ্যান্টিবায়োটিকটা এভাবেই আসে '।

খামারিদের অনেকই মনে করেন, দানাদার গবাদি পশুর খাদ্যে অ্যান্টিবায়োটিক এবং সিসা থাকতে পারে। যদিও এটি শুধুই তাদের ধারণা।

শাহজাদপুর উপজেলায় পোতাজিয়া দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি ওয়াজ আলী বলেন, অনেক কোম্পানি আছে যারা গবাদি পশুর খাদ্য বাজারজাত করার জন্য গরুর খামারিদের নানাভাবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করে। তারা খামারিদের

বোঝানোর চেষ্টা করে যে তাদের কোম্পানির খাবার গরুকে দিলে দুধের উৎপাদন বাড়বে।

তিনি জানান, বর্ষা মৌসুমে গবাদি পশুর চারণভূমি কমে যায়। ফলে গবাদি পশুর খাদ্যের জন্য প্যাকেট-জাত দানাদার খাদ্যের উপর নির্ভর করতে হয়।

ওয়াজ আলী ক্যাটেল ফিডের কোম্পানি বিভিন্ন অবস্থায় হয়তো হরমোন জাতীয় দ্রব্য দিয়া বলে আমার মালটা খাওয়াও দুধ বেশি হবে। সেই ক্ষেত্রে সরকারিভাবে ক্যাটল ফিড পরীক্ষা করুক, বলছিলেন ওয়াজ আলী।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ক্যাটল ফিডের বিভিন্ন কোম্পানি ভেদে দুধের উৎপাদন এক থেকে দুই কেজি হেরফের হয়।

তবে শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, দানাদার পশুখাদ্য থেকে ক্ষতিকর উপাদান গরুর শরীরে প্রবেশ করার সুযোগ নেই। তিনি দাবি করেন, পশু খাদ্যের নমুনা বাজার থেকে সংগ্রহ করে প্রায়ই পরীক্ষা করা হয়।

গবাদি পশুর অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা খামারিদের বা সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলবো, ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করবেন না।

তিনি বলেন, গরুর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হলে সেটির প্রভাব ক্ষেত্রবিশেষ সাত থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত থাকে। এ সময়টুকু দুধ খাওয়া যাবে না।

রহমান জানান, এমন কিছু অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ আছে যেগুলো গবাদি পশু এবং মানুষ- উভয়ের শরীরের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে সে ক্ষেত্রে শুধু প্রয়োগের মাত্রা হেরফের হতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব

 

এসবি/এএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়