সুজিৎ নন্দী : জুন থেকে অক্টোবরকে ডেঙ্গু মৌসুম ধরা হলেও রাজধানীতে এ বছর এর প্রকোপ শুরু হয়েছে ফেব্রæয়ারি মাসের শুরু থেকে। এখন প্রকট আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে ডেঙ্গু আতংকের মধ্যে রাজধানীর মানুষ বসবাস করছে। প্রতিদিনই হাসপাতালে গড়ে ২ হাজার ৫শ’ ভর্তি হলেও স্বাস্থ্য অধিদফতর বলছে গড়ে ১ হাজার। তরে অধিদফতরই জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৪শ ৭৭ জন। কন্টোল রুম থেকে ডা. শাখাওয়াত জানান, এ মৌসুমে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৭ হাজার ১৮৩ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১৬জন। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালসহ এ মৌসুমে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং মৃতের সংখ্যা ৩০ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ একাধিক সূত্রে এতথ্য জানা যায়।
জানা যায়, মশার উপদ্রব থেকে রাজধানীর বাসিন্দাদের রক্ষায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) বাজেট ২২ কোটি টাকা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাজেট ২৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, রাজধানীর ৭০ ভাগ স্থানে এডিস মশার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের এ বছরের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ডিএনসিসির চেয়ে ডিএসসিসির এলাকাতেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। এ ব্যাপারে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আমরা সকল প্রকার চেষ্টা চালাচ্ছি। শিঘ্রই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমরা নগরীর সকল মানুষকে এর সঙ্গে যুক্ত করেছি।
মেডিসিন বিশেষঞ্জ ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, এখনও যদি মশা নিধনে বিশেষ অভিযান চালানো না হয় তা হলে আগামী মৌসুমে মহামারি আকার ধারণ করবে। চলতি মৌসুমে মশার উপদ্রব ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এখনো নিজ বাড়ি বা ফ্ল্যাটে এডিস মশা নিধণ সহজ পথ বাড়িতে পানি জমতে না দেয়া। ঢাকার জলাবদ্ধতা ডেঙ্গু ছড়ানোর অন্যতম কারণ। পাশাপাশি অভিজাত এলাকায় ডেঙ্গু মশার প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
তিনি আরো বলেন, নির্মাণাধীন ভবন ছাড়াও বাসাবাড়ির ফুলের টব, বালতি ও পুরোনো টায়ারে জমে থাকা পানি ডেঙ্গুর ভাইরাসবাহী মশার বংশবিস্তারের উপযুক্ত জায়গা। তবে ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ওষুধ দিচ্ছি। পাশাপাশি নগরবাসীকে সচেতন করার কাজও করছি। নগরবাসী যাতে নিজ নিজ বাসাবাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখে সেজন্য অভিযান চালানো হচ্ছে।
গত বছর ডেঙ্গু রোগে মারা গেছে ২২ জন। প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৩০ জন। এবং ডেঙ্গুরোগে আক্রান্ত হয় প্রায় ৬ হাজার। গত ৫ বছরে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ২০ হাজারের বেশি। এ সময় ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ সিটি করপোরেশনের ক্র্যাশ প্রোগ্রাম, বিশেষ অভিযান, বাউল ও জারিগানের মাধ্যমে অভিযান, প্রশিক্ষণ নিয়ে অভিযান ও রুটিন ওয়ার্ক তেমন কাজে আসেনি।
আপনার মতামত লিখুন :