মাজহারুল ইসলাম : বায়ো-ইঞ্জিনিয়ার ডঃ শুভ রায়, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়াতে বায়োইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড থেরাপিউটিক সায়েন্স-এর শিক্ষক। তার আবিস্কৃত কৃত্রিম কিডনি আকারে মানুষের হাতের মুঠোর সমান। আসল কিডনি প্রতিস্থাপনের তুলনায় কৃত্রিম কিডনি বসানোর খরচও কম। জাগরণ
বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের প্রত্যেক বছর লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় কিডনির সংক্রান্ত বিভিন্ন অসুখে। কৃত্রিম কিডনি বাজারে এলে এ সংক্রান্ত অসুখে আক্রান্ত বিশ্বের লাখো মানুষের দুশ্চিন্তার দিন শেষ হবে।
ডঃ শুভ রায় প্রায় ১০ বছর আগে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির ৪০ জন অধ্যাপক ও গবেষককে নিয়ে শুরু করেছিলেন কৃত্রিম কিডনি তৈরির কাজ। বিশিষ্ট নেফ্রোলজিস্ট উইলিয়াম এফ ফিসেলও ওই গবেষক দলে ছিলেন । নিরলস গবেষণা চলে দিনের পর দিন। এরিমধ্যে একদিন ডঃ শুভ রায় আবিষ্কার করেন, সিলিকন নির্মিত সূক্ষ্ম ছিদ্রযুক্ত একটি পর্দা। যা রক্ত নিখুঁত ভাবে ছেঁকে ফেলতে পারে। এভাবেই ৪১ জন বিজ্ঞানীর নিরলস পরিশ্রমে তৈরি হলো কৃত্রিম কিডনি। দেহের দুটি কিডনি রক্তস্রোত থেকে যেভাবে দূষিত পদার্থগুলিকে ছেঁকে নেয় তেমনি কৃত্রিম কিডনিও একইভাবে রক্ত শোধনের কাজ করতে পারে।
মানুষের দেহে কিডনি দুটি তলপেটের পিছনদিকে থাকে। সেখানেই যে কোনো একদিকে কফির কাপের মতো দেখতে কৃত্রিম কিডনি বসিয়ে দেয়া হবে। এরপর হৃদপিণ্ড থেকে আসা দূষিত রক্তকে ছেঁকে বিশুদ্ধ করে দিবে কৃত্রিম কিডনি। একইসঙ্গে কৃত্রিম কিডনি নজর রাখবে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলির উৎপাদন ও ক্ষরণের ওপরে। আসল কিডনির মতই রক্ত শোধন ছাড়াও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ভিটামিন ডি তৈরি করবে কৃত্রিম কিডনি।
আমেরিকার কয়েক হাজার রোগীর দেহে পরীক্ষামূলকভাবে এই কৃত্রিম কিডনি বসানো হয়। সে পরীক্ষা এখন সাফল্যের পথে। এখন ডঃ শুভ রায় ও তাঁর টিম কৃত্রিম কিডনি’র চুড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় আছেন। এ অনুমোদন আসছে হয়তো এ বছরের শেষেই। তারপর কৃত্রিম কিডনি বিশ্ব বাজারে আসতে আর বেশি সময় লাগবে না। কারণ এরিমধ্যে কৃত্রিম কিডনি দ্রুত উৎপাদনের পরিকাঠামোও তৈরি হয়ে গেছে।
কৃত্রিম কিডনির সঠিক দাম এখনও জানা যায়নি। তবে ডঃ শুভ রায় আশ্বস্ত করে বলেন যে, কিডনি রোগীর নিয়মিত ডায়ালিসিস, কিংবা কিডনি প্রতিস্থাপনের মোটা অঙ্কের টাকার তুলনায় কৃত্রিম কিডনি বসানোর খরচ অনেক কম হবে।
ডঃ শুভ রায় এখন ব্যস্ত আছেন কৃত্রিম অগ্নাশয় তৈরির কাজে। সম্পাদনা : সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :