নিউজ ডেস্ক : গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সহসভাপতি শামসুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুর হোসেনকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ওই দুই নেতাকে দলীয় সব পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিন
জানা যায়, মামলাসহ নানামুখী চাপে সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন সম্প্রতি জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। জি এম কাদেরের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে তিনি জাপায় যোগ দেন। সহসভাপতি শামসুল হক স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে ‘মুচলেকা’ দিয়ে বিএনপির রাজনীতিকে ‘গুডবাই’ জানিয়েছেন। একইভাবে উত্তরা পশ্চিম থানা বিএনপির সভাপতি হাজী দুলালও বিএনপির রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছেন।
এ তিন নেতাই নয়, দক্ষিণ ও উত্তরের বেশ কয়েকজন নেতা বিএনপির রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছেন। কেউ আওয়ামী লীগ বা কেউ জাতীয় পার্টির রাজনীতি করছেন। কেউ বা পুলিশের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে জানিয়েছেন, তিনি আর বিএনপি করেন না। কেউ কেউ আবার মামলা-হামলা থেকে রেহাই পেতে মুচলেকা দিয়ে বিএনপির রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। দেশে থাকলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে-মিশে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সহায়-সম্পত্তি টিকিয়ে রেখেছেন। বাড়িতেও থাকেন পুলিশ ও আওয়ামী লীগকে ম্যানেজ করে। তবে এসব মানতে নারাজ বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার। তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক, বিএনপিকে আটকানো যাবে না। দিন যতই যাচ্ছে, বিএনপি আরও বেশি শক্তিশালী হচ্ছে। দল ঘুরে দাঁড়াবেই।
আরো জানা যায়, দক্ষিণের সহসভাপতি আবদুল মোতালেবও দল ছেড়েছেন আওয়ামী লীগের চাপে। সম্প্রতি তিনি এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। পরে তিনি বিএনপি থেকে অব্যাহতি নেন। একই শাখার নেতা কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সাইফুলও বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেছেন। স্থানীয় এমপির চাপে তাকে বিএনপি ছাড়তে হয়েছে বলে মহানগর বিএনপির সিনিয়র এক নেতা জানিয়েছেন। ওই নেতা জানান, সাইফুল ও তার ভাই বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক মামলার আসামি। দল ছাড়লে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে এমন আশ্বাসে মোল্লা সাইফুল বিএনপিকে বিদায় দেন।
দারুস সালাম বিএনপির সভাপতি হাজী আবদুর রহমানও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে রাজনীতি করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। দলে নিষ্ক্রিয়তাসহ নানা কারণে তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বাচ্চুও দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।
২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল দলের যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী আবুল বাসারকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির ৭০ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। আর এম এ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ঘোষণা করা হয় উত্তরের কমিটি। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কমিটির মেয়াদ ২ বছর। সে হিসাবে ওই কমিটির মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। বিএনপির নির্দেশনা ছিলো এক মাসের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে হবে। কিন্তু দিন মাস বছর গড়িয়ে মেয়াদ ফুরিয়েছে কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি আর হয়নি। শুধু তাই নয়, ২ সিটির যেসব থানা ও ওয়ার্ডের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল সেগুলোও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। দীর্ঘ ১০ মাস কারাবরণের পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি হাবিব-উন নবী খান সোহেল। ওই শাখার সাধারণ সম্পাদকও কিছুদিন আগে প্রায় ৩ মাস কারাবরণ করে জামিনে মুক্তি পান। ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুম কমিটি ঘোষণার আগ থেকেই দেশ ছেড়েছেন। এক বিদেশি হত্যা মামলার প্রধান আসামি হয়ে তিনি এখন মালয়েশিয়া অবস্থান করছেন। ওই শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসান মামলার অজুহাত দেখিয়ে কমিটি হওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে। কমিটি গঠনে তার বিতর্কিত ভূমিকাও ছিল। কমিটি নিয়ে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও ছিল তার বিরুদ্ধে। উত্তর শাখা সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হওয়ার পেছনে তাকেই দায়ী করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি অনেকটা অভিভাবকহীন। সম্পাদনা : মাজহারুল ইসলাম
আপনার মতামত লিখুন :