মোরশেদ শফিউল হাসান : সন্তানদের ভর্তি করার জন্য স্কুলের খোঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন তাসলিমা বেগম রেনু। ছেলেধরা সন্দেহে নাকি জনতা তাকে পিটিয়ে মেরেছে। রেনু যদি সত্যিকার ছেলে ধরা হতেন তাহলেও তাকে পিটিয়ে মারার অধিকার রাষ্ট্র বা আইন কাউকে দেয় কি? কেউ কেন তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলো না?
আশপাশে কোথাও কি কোনো পুলিশ ছিলো না? তারা তখন কী করছিলো? যে এলাকায় ঘটনা ঘটেছে সেটা কি থানা-পুলিশের আওতার বাইরের কোনো জায়গা? এরপরও ওই থানার দায়িত্বে যিনি বা যারা ছিলেন তাদের অবিলম্বে সাসপেন্ড করা হবে না কেন? ঘটনাস্থলের আশপাশে একজনও বিবেকবান বা সংবেদনশীল মানুষ কী ছিলেন না যিনি ঘটনা ঘটার সময় দ্রুত পুলিশকে ফোন করে খবর দিতে পারতেন? নাকি খবর পেয়েও পুলিশ গা করেনি? এমন একটা রোমহর্ষক ও মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানার পরও কি আমরা নিজেদের সভ্য দেশের সভ্য নাগরিক বলে দাবি করবো? বলবো যে দেশে আইনের শাসন আছে? বলবো কি যে এটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা? স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর রেনু একাই তার সন্তানদের লালন-পালন করছিলেন। সেদিন গিয়েছিলেন বাচ্চাদের ভর্তি করার জন্য একটা স্কুল খুঁজতে। তার সে স্বপ্নের নিষ্ঠুর অপমৃত্যু ঘটলো। এখন ওই মাতৃহীন অসহায় শিশু দুটিকে কে দেখবে? কে তাদের খাওয়াবে-পরাবে? রাষ্ট্র কি এগিয়ে আসবে? যে তথাকথিত জনতার সন্দেহ ও প্রতিহিংসার বলি রেনুকে হতে হলো সেই ‘জনতা’ কি অশনাক্ত থেকে যাবে? তাদের কারও বিচার ও মানুষ খুনের দায়ে শাস্তি হবে না? তাহলে এই জঙ্গুলে বাস্তবতা থেকে আমরা বেরুবো কীভাবে? ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :