সওগাত আলী সাগর : বিদেশিদের কাছে অভিযোগ করা আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। বড় বড় রাজনৈতিক দল, আমাদের অনুকরণীয় নেতা-নেত্রীরা এটিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। প্রিয়া সাহার আর দোষ কি? প্রিয়া সাহা কেন ট্রাম্প চাচার কাছে নালিশ দিলেন... সেই আলোচনার আগে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা মাথায় রাখা দরকার। তার চেয়ে বরং তার অভিযোগের বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়। প্রিয়া সাহার অভিযোগে তোলা তথ্য পরিসংখ্যান না হয় বাদ দিই। অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাতও কিন্তু গবেষণা করে সাংবাদিক সম্মেলন করে ‘হিন্দুদের হারিয়ে যাওয়ার’ একটি তথ্য পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেছিলেন। প্রিয়া সাহার তথ্য বাদ দিয়ে আমরা বরং আবুল বারকাতের তথ্য নিয়ে আলোচনা করি। কথাটা যখন উঠেছে... তা নিয়ে আলোচনা করতে তো দোষ দেখি না।
প্রিয়া সাহার বাড়িতে আগুন দেয়ার তথ্য তিনি ফেসবুকে জানিয়েছিলেন। তার পরিবারের উপর জোরজবরদস্তির কথাও তিনি বলেছিলেন। মনে করে দেখেন তো, তার পাশে দাঁড়ানোর কথা বাদ দিই, তাকে সহমর্মিতা জানানোর কথা বাদ দিই, তার ওই পোস্টে, অ্যাংরি, স্যাড... কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া কি আপনি দেখিয়েছিলেন? নিদেনপক্ষে তার পোস্টে কি আপনি লাইক দিয়েছিলেন? মনে করে দেখুন তো? প্রথম আলোর একটা রিপোর্টে পড়েছিলাম... সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবিএস ‘মিসিং পপুলেশন’ টার্মটা ব্যবহার করেছে। রিপোর্টার এর বাংলা করেছেন... ‘হারিয়ে যাওয়া মানুষ’। প্রিয়া সাহা কোন টার্মটি ব্যবহার করেছেন? আমি জানি ফেসবুকে অনেকে এই ‘মিসিং পপুলেশন’ টার্মটাকে ‘গুম হয়ে যাওয়া’ বা ‘গুম করে দেয়া’ হিসেবেও চালিয়ে দিচ্ছেন।
প্রিয়া সাহা ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ‘ডিসঅ্যাপেয়ার’ বলে উল্লেখ করেছেন। তার এই ‘ডিসঅ্যাপেয়ার’ আর সরকারি প্রতিষ্ঠান বিবিএসের ‘মিসিং পপুলেশনের’ মধ্যে পার্থক্য কি? এই সংখ্যাটা তিনি কিসের ভিত্তিতে বলেছেন তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। আবুল বারকাতের গবেষণায় ‘হারিয়ে যাওয়া’ হিন্দুর সংখ্যাটা কতো?
প্রিয়া সাহা যেমন হিন্দু সংখ্যালঘু (এই টার্মটাকে আমি ঘৃণা করি) হিসেবে নিজের কথা বলেছেন, সেখানে চীনের একজন মুসলিম সংখ্যালঘু চীনের মুসলমানদের অবস্থার কথা বলেছে। একটা কথা মনে রাখা দরকার, সীমান্ত পার হলে আমি আপনি প্রত্যেকেই সংখ্যালঘু। আর সংখ্যালঘুরা সর্বত্রই অসহায় । ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :