আজহারুল হক, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের ৩টি সরকারি কলেজসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অধিকাংশ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিপর্যয় ঘটেছে। বেসরকারি কলেজগুলো তুলনামূলকভাবে ভালো ফল করলেও জেলার গফরগাঁও সরকারি কলেজ, মুক্তাগাছা সরকারি শহিদ স্মৃতি কলেজ ও গৌরীপুর সরকারি কলেজসহ ৩টি সরকারি কলেজের দারুণ ফল বিপর্যয় ঘটেছে। অপরদিকে ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজ ও ভালুকার উথুড়ায় সোনাউল্লা হাইস্কুল এন্ড কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে।
ভালুকায় বেসরকারি শহিদ স্মৃতি বিএম কলেজ থেকে ০৫জন পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউ পাস করেনি।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের (স্বাশিপ) ময়মনসিংহ জেলার সাবেক সভাপতি ও স্বাশিপ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ সামসুল বারী জানিয়েছেন, সরকারি কলেজের সাইনবোর্ড দিয়ে অধিকাংশ শিক্ষক প্রাইভেট ও কোচিং ব্যবসায় বেশি ব্যস্ত থাকেন। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার প্রতি তারা মনোযোগী হন না। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা কোচিং বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট, এন্ড্রয়েট মোবাইলের অপব্যবহার, নিয়মিত যেসব শিক্ষার্থী ক্লাস করে না এবং নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারে না এমন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়াসহ নানা কারণে সরকারি কলেজগুলোতে ভালো ফলাফল হয় না। এ ব্যাপারে অভিভাকগণ শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার প্রতি আরো কড়াকড়ি ও আন্তরিক হতে হবে।
গফরগাঁও সরকারি কলেজ এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ১০১৭ জন পরীক্ষার্থীর ৪০৩ জন পাস করলেও কেউ জিপিএ-৫ পায়নি, পাশের হার ৩৯.৬৩ ভাগ, এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬১৪ জন ফেল করেছে ।
গৌরীপুর সরকারি কলেজে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ১৪১৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে, তন্মধ্যে ৮৪৬ জন পাস করছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ০৪ জন, পাশের হার ৫৯.৮৭ ভাগ, ফেল করেছে ৫৬৭ জন।
মুক্তাগাছা সরকারি শহিদ স্মৃতি কলেজে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় মোট ১২৭১ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে, তন্মধ্যে ৮১৯ জন পাস করছে, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪জন, পাশের হার ৬৪.৪৪ ভাগ, ফেল করেছে ৪৫২ জন।
ময়মসনসিংহ জেলার ২টি বেসরকারি কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাস করেছে। ময়মনসিংহ গার্লস ক্যাডেট কলেজে ৫০জন পরীক্ষার্থীর মাঝে সবাই পাস করেছে তন্মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪১জন, পাসের হার শতভাগ। এছাড়াও এমপিওভুক্তিবিহীন ভালুকার উথুরায় ১২ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে পাস করেছে ১২জন, কেউ জিপিএ-৫ না পেলেও পাশের হার ১০০.০০ শতাংশ।
এছাড়াও জেলার অজপাড়াগা ফুলবাড়িয়া উপজেলার কেশরগঞ্জ কলেজ থেকে ৩২৬ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে পাস করেছে ৩২০জন, তন্মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৩জন, পাশের হার ৯৮.১৬ শতাংশ। ভালুকার এমপিওভুক্তিহীন কলেজ আব্দুল গণি মাস্টার স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৩৪ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে পাস করেছে ৩৩জন, কেউ জিপিএ-৫ না পেলেও পাশের হার ৯৭.০৬ শতাংশ।
এছাড়া জেলার ভালুকার শহিদ স্মৃতি বিএম কলেজ থেকে ০৫জন পরীক্ষায় অংশ নিলেও কেউ পাস করেনি। এটি জেলার একমাত্র কলেজ যেখান থেকে কেউ পাস করেনি। গফরগাও উপজেলার মজিবুর রহমান কলেজ ১৬ জন পরীক্ষার্থীর মাঝে পাস করেছে মাত্র ০১জন, কেউ জিপিএ-৫ না পেলেও পাশের হার ০৬.২৫ শতাংশ। সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম
আপনার মতামত লিখুন :