মুসবা তিন্নি : পুরান ঢাকার বংশালের কণ্ঠশিল্পী মোহাম্মদ উল্লাহ অভি হত্যা মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই একমাসেও। ঘটনার তদন্তে তিনজন কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন। কিন্তু কেউই মামলার সুরহা করতে পারেনি। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, এ ঘটনায় এক নারীর সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। কিন্তু পুলিশ বলছে অভির মৃত্যু ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছে।
গত ১৩ জুন সকালে বংশালের মকিম বাজার কবরস্থানে মোহাম্মদ উল্লাহ অভিকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রথমে মিটফোর্ড হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ১৯ জুন রাতে মৃত্যু হয় অভির। এ ঘটনায় অভির বাবা ওলি উল্লাহ বাদী হয়ে বংশাল থানায় হত্যা প্রচেষ্টা মামলা করেন। পরে মারা গেলে সেটি হত্যা মামলায় রুপান্তর হয়। মামলাটির প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন বংশাল থানার উপপরিদর্শক নুরে আলম। পরে তদন্তভার পান একই থানার উপপরিদর্শক রসূল সামদানী। গত সপ্তাহে মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তদন্ত করছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম।
নিহতের বোন তাসনুহা আক্তার বলেন, ‘অভিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। তার মাথায় তিন জায়গার কোপের চিহ্ন রয়েছে। অথচ তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, তাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি গাছ থেকে পড়ে মারা যান তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে অভিকে কোপানোর পর কবরস্থানের পাশের কোনো ভবন থেকে ফেলে দেওয়া হয়। কারণ তার দেহে উঁচু স্থান থেকে পড়ে যাওয়ার মতো আঘাতের চিহ্নও ছিল।
এই ঘটনায় এক নারীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাসনুহা আক্তার বলেন, কবরস্থানের পাশেই সেই নারীর বাসা। আমাদের সন্দেহ, বাসায় ডেকে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পর অভিকে ছুঁড়ে ফেলা হয়। কারণ চারদিক বেষ্টিত ওই কবরস্থানের ফটক বন্ধ ছিল। উঁচু দেওয়াল টপকে অভির সেখানে যাওয়ার কথা নয়। আবার রক্তাক্ত জখম করার পর কেউ তাকে ওখানে ফেলে আসে- এমন প্রশ্নও অবান্তর। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে জোরাল সম্ভাবনা হচ্ছে, পাশের ভবন থেকে ফেলে দেওয়া।
ম্যাসেঞ্জারে ‘আ’ অদ্যাক্ষরের এক নারীর সঙ্গে অভির যোগাযোগ হতো বলেও অভির বোনের অভিযোগ। তার ট্যাব খুলে ম্যাসেঞ্জারে ঢুকে দেখা গেছে, দুইজনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। অভি কোনো কারণে তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছিলেন না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারী ‘দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপরই খুনের ঘটনা ঘটে। তবে অভির বোনের অভিযোগ, ওই নারীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। আর তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পুলিশ মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে মামলাটি আমাদের কাছে এসেছে। মামলাটি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাসহ একাধিক ব্যক্তি মামলাটির তদারকি করছে। তবে এখনও পর্যন্ত আমরা কাউকে শনাক্ত করতে পারিনি। ঢাকা টাইমস
আপনার মতামত লিখুন :